কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আল জাজিরাকে জামায়াত-শিবিরের মুখপত্র দাবি করে সংবাদমাধ্যমটির সম্প্রচার বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
সম্প্রতি বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরার প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকেলে আল জাজিরায় সম্প্রচার করা হয় ‘গ্যাং ক্লোজ টু বাংলাদেশ পিএম এক্সট্র্যাক্টস ব্রাইবস ফর স্টেট কন্ট্রাক্টস’ শিরোনামে এক প্রতিবেদন।
প্রধানমন্ত্রী ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে করা এই প্রতিবেদনকে ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর’ বলে উল্লেখ করে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবেদনটিকে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর)।
এই প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, ‘বানোয়াট’ এই প্রতিবেদনের জন্য আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তাভাবনা করছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘শুনেছি টাকাটুকা খেয়ে এই নিউজ করেছে। তারা নাকি পেইড নিউজ করে থাকে। কাতার থেকে সম্প্রচার করা হলেও চ্যানেলটির ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা হয় লন্ডন থেকে। এদের কাজই হলো মুসলমান দেশগুলোর ভুল খুঁজে খুঁজে বের করা। …আমরা তাদের প্রতিবেদনকে প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছি।’
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন থেকে আল জাজিরা ও প্রতিবেদনটির অন্যতম ধারাভাষ্যকার ডেভিড বার্গম্যানকে জামায়াতের পেইড এজেন্ট দাবি করে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি উঠেছে।
মানববন্ধনে সংগঠনটির একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘আল জাজিরা বহু আগে থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে চলেছে। তারা ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করে টেলিভিশন চ্যানেলটি প্রকৃত অর্থে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছে।’
টিভি চ্যানেলটি বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা ব্যাহত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।’
বাংলাদেশে আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের অপরাংশের মানববন্ধন। ছবি: নিউজবাংলা
একই সময়ে সংগঠনটির আরেকটি অংশও আল জাজিরার বিরুদ্ধে মানববন্ধনের আয়োজন করেন রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীনের নেতৃত্বে এই মানববন্ধন থেকে ডেভিড বার্গম্যানের কুশপুতুল দাহ করা হয়।