আগে থেকে তিন মামলায় দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মানহানির অভিযোগে করা মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ আদালতের বিচারক জামাতুল মোর্শেদা বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এই রায় দেন। রায়ে তারেক রহমানকে দুই বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকে রাজাকার ও পাকবন্ধু আখ্যা দিয়ে বেশ কিছু বক্তব্য দেন তারেক। সেই খবর প্রকাশিত হয় দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে।
এতে বঙ্গবন্ধুর সম্মানহানি হয়েছে জানিয়ে সে সময় নড়াইলের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান বিশ্বাস নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারেকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
একই ঘটনায় নোয়াখালীতে করা আরেকটি মানহানি মামলার বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে তারেক রহমানকে গত ৭ জানুয়ারি গ্রেপ্তারের আদেশ দেয় আদালত। সাত বছর আগে জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এ ওই মামলাটি করেন সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক।
বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তির এই ঘটনায় একাধিক জেলায় মামলা আছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী তারেক রহমান এ নিয়ে মোট চারটি মামলায় দণ্ডিত হলেন।
২০১৬ সালের ২১ জুলাই বিচারিক আদালতের খালাসের রায় বাতিল করে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশে দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি ২০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
দুই বছর পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তারেকের দণ্ড হয় ১০ বছর। এই মামলায় সাজা হয়েছে তার মা বেগম খালেদা জিয়ারও। বিচারিক আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিলেও উচ্চ আদালত সাজা দ্বিগুণ করেছে। দুই বছরের বেশি সাজা ভোগের পর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিবেচনায় গত মার্চে বেগম জিয়া সাময়িক মুক্তি পান।
তারেকের বিরুদ্ধে তৃতীয় সাজার রায় আসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই রায়ে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পরের বছর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি দেশে ফেরেননি।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়ার সাজা হলে তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি।