বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফের রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কায় বর্ডার সিল

  •    
  • ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২০:৫৯

‘আগেরবার যারা এসেছিল, তাদের আমাদের জনগণই রিসিভ করেছিল। এখন আমাদের জনগণ আর গ্রহণ করার মুডে নেই। আমরা আমাদের বর্ডার সিকিউর করে রেখেছি।…যদি সেখানে (মিয়ানমারে) কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তবে অন্যরা (অন্য দেশ) তাদের নিয়ে যাক। আমরা আর একজনকেও নিতে পারব না।’

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর আবার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ এ বিষয়ে সতর্কও করেছে ঢাকাকে। আর সরকার সীমান্ত এলাকায় কড়া পাহারার নির্দেশ দিয়েছে।

কোনো অবস্থানেই নতুন কোনো রোহিঙ্গাকে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বুধবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক বন্ধু রাষ্ট্র আছে, যারা পশ্চিমা রাষ্ট্র। তাদের উৎকন্ঠার কথা আমাদের বলেছে। তারা আশঙ্কা করছেন এখন আবার রোহিঙ্গা ঢল আসতে পারে। আমরা আমাদের বর্ডার সিকিউর করে রেখেছি।’

বাংলাদেশে আশির দশক থেকে নানা সময় মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হয়ে আসছে। তবে ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বড় ঢলটি আসে।

সে সময় মানবিক কারণ দেখিয়ে সরকার সীমান্ত খুলে দেয়। আর এখন দেশে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে চুক্তি করেও কথা রাখেনি মিয়ানমার। সবশেষ এই প্রক্রিয়ায় চীনের অন্তর্ভুক্তির পর যখন নতুন করে আশাবাদ তৈরি হয়েছে, তখন মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন শঙ্কা।

গত সোমবার অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এ পরিবর্তনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আবার অনিশ্চয়তার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয় কি না, এ নিয়েও তৈরি হয়েছে আলোচনা।

২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিয়াতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

তবে বাংলাদেশ এবার কাউকে ঢুকতে দেবে না জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আগেরবার যারা এসেছিল, তাদের আমাদের জনগণই রিসিভ করেছিল। এখন আমাদের জনগণ আর গ্রহণ করার মুডে নেই। আমরা আমাদের বর্ডার সিকিউর করে রেখেছি।

‘যদি সেখানে (মিয়ানমারে) কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তবে অন্যরা (অন্য দেশ) তাদের নিয়ে যাক। আমরা আর একজনকেও নিতে পারব না।’

মিয়ানমারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে কন্টাক্ট করা যাচ্ছে না। কারণ, ওরা সব লাইন টাইন অফ করে দিয়েছে। ফলে আমরা এইখানেই তাদের যে অ্যাম্বাসেডার আছেন এবং চায়না অ্যাম্বাসেডারের সঙ্গে কথা বলেছি।’

মিয়ানমারে এই পরিবর্তনে প্রত্যাবাসন আটকাবে না বলেও আশাবাদী মন্ত্রী।

রোহিঙ্গা ঢলে বাংলাদেশে আসার সময়। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

বলেন, ‘বাই নাউ দে মাস্ট হ্যাভ কন্টাক্টেড। উই ওয়ান্ট টু কনটিনিয়্যু দা প্রসেস। দি রিপার্টিয়েশন প্রসেস। সরকার টু সরকার বিশেষের এগ্রিমেন্ট হয়েছে। কোনো ব্যক্তি টু ব্যক্তির মধ্যে এটা ঘটেনি। সুতারাং দ্যা প্রসেস সুড বি কন্টিনিউ।’

মিয়ানমারে সামরিক সরকার থাকার পরেও ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালে প্রত্যাবাসন হয়েছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘তাহলে এখন নয় কেন?’

মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের নিন্দা নয় কেন?

পশ্চিমা দেশগুলো যখন মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানকে নিন্দা জানিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ কেন নিন্দা জানাল না- এমন প্রশ্নও ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের নেইবার কান্ট্রি। অন্যরা কিন্তু নিন্দা জানিয়েই শেষ। দেখেন রোহিঙ্গারা কী হলো, নির্যাতিত হলো। ওনারা কিন্তু একটু একটু নিন্দা জানিয়েই শেষ।

রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসছে রোহিঙ্গারা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

‘মিয়ানমারের ইতিহাসে এই মিলিটারির টেরিটোরির ইতিহাস বহু বছর ধরে আছে। আমরা যেটা বলেছি, আমরা ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। দিস ইজ আওয়ার প্রিন্সিপাল অল দো! আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং গণতন্ত্র অন্যদেশে প্রমোট হোক তাও চাই। আমরা বলেছি, মিয়ানমারে তারা যেন গণতন্ত্র সমুন্নত রাখে।

‘আর আমরা বলেছি, তারা যেহেতু আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র, এখানে যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে। আর তৃতীয়ত, আমরা বলেছি রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনের বিষয়টা যেন দ্রুত শুরু হয় এবং চলমান থাকে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই না, এই এলাকায় সামান্য কিছু নিয়ে মারামারি হোক। মিডিল ইস্টের মতো একটা কিছু অজুহাত নিয়ে বিরাট একটা মারামারি হোক, অশান্তির সৃষ্টি হোক।’

বাংলাদেশ কী তাহলে মিয়ানমারের সেনাদের স্বাগত জানাচ্ছে- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘না, আমরা স্বাগত জানাইনি। আমরা তাদের উপদেশ দিয়েছি, তারা যেন তাদের শাসনতন্ত্রে গণতন্ত্রের ধারা বহাল রাখে।’

বাংলাদেশ অং সান সু চির মুক্তি চায় কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘না আমরা সু চির মুক্তিও দাবি করিনি। বরং আমাদের রোহিঙ্গারা বলবেন, সু চি কে কুতুপালং পাঠানো হোক। উনি এসে দেখে যাক কী অবস্থা উনি করেছেন।’

আবারও সীমান্তে রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা করছে কয়েকটি দেশ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস

২০১৭ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের সময় শান্তিতে নোবেল জয়ী সু চির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকার বিষয়টিও তুলে ধরে হাতাশাও জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যা আমরা মোটেও আশা করিনি। যিনি পিস অ্যাওয়ার্ড উইনার নেতা ছিলেন, যার জন্য আমিও পথে নেমেছিলাম, সেই সরকারের মদদে রোহিঙ্গা নিপীড়ন ঘটেছিল। ওই রকম একজন নেতার কাছ থেকে তো এটা আশা করা যায় না। তাই সাফাই গেয়ে তো লাভ নাই। গট অ্যা চেক।’

এ বিভাগের আরো খবর