নানা অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি পাওয়া ২১ নেতা এবার সংগঠনের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
তাদের অভিযোগে, তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটিতে যাদের জায়গা দেয়া হয়েছে, তাতে অনেক বিতর্কিত নেতা স্থান পেয়েছেন। বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি করতে গিয়ে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। আবার কেন্দ্রীয় নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব ভাগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা।
পাশাপাশি কী অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেটাও তাদের জানানো হয়নি। আবার তাদেরকে অভিযোগ খণ্ডানোর সুযোগও দেয়া হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত হিসেবে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে এসে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর ২১ জনকে অব্যাহতি দেন জয়-লেখক।
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন এই অব্যাহতিপ্রাপ্তরা।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পড়েন ছাত্রলীগের সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আবদুল্লাহ বিন মুন্সি।
তিনি বলেন, কোন অভিযোগ এবং কিসের ভিত্তিতে সেগুলো প্রমাণিত হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা ছাত্রলীগের পক্ষে থেকে তাদের দেয়া হয়নি। অব্যাহতি পাওয়ার পর তারা জয় ও লেখকের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চেয়েও জবাব পাননি।
মাহমুদ বলেন, ‘আমরা মুজিব আদর্শের সৈনিক, দেশরত্ন শেখ হাসিনার কর্মী। এটাই আমাদের বড় পরিচয়। অনৈতিকভাবে আমাদের সঙ্গে কেন অবিচার করা হলো? সংগঠনের একজন পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে আমরা চাই চলমান অপরাজনীতি বন্ধ হোক।’
বিতর্কিত তকমা দিয়ে দুঃসময়ের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তাদের স্থলে বিবাহিত, মাদকাসক্ত, বহিষ্কৃত, বেশি বয়সী ও মামলার আসামিদের পদায়ন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃত বিতর্কিতদের রক্ষা করতে বিতর্কিতদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বঙ্গবন্ধু ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার আদর্শিক কর্মীদের বলি দিয়ে যে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে, তা প্রকৃতার্থে নেত্রীর সাথে প্রতারণার শামিল।’
গত ৩১ জানুয়ারি জয় লেখক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৬৮ জনকে পদায়ন করা হয়। এর মধ্যে কয়েকজনকে পদোন্নতিও দেয়া হয়।
অব্যাহতিপ্রাপ্তদের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এসব পদে বয়সোত্তীর্ণ, মাদকসেবীসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িতদের স্থান দেয়া হয়েছে।
পদ পাওয়া ৬৮ জনের মধ্যে বয়সোত্তীর্ণ, মাদকসেবী, চাঁদাবাজির কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত, বহিষ্কৃত, বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামিরা রয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিতরা কীভাবে জায়গা পেল-জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিতর্কিতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও প্রমাণ নেই। তাছাড়া কমিটিতে স্থান পাওয়াদের পূর্বেও পদ ছিল।’
তিনি বলেন, ‘নতুন করে পদায়নের মধ্যে কেউ বিতর্কিত নেই। এগুলো সব ভুয়া এবং মিথ্যা কথা। এভাবে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার। তাদের কাছ থেকে আমরা এটি আশা করিনি।’