প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিবের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় লালমনিরহাটের মো. করিম মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে জামিন না দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে হাজির হয়ে আগাম জামিন চাইলে বুধবার বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ করিমকে পুলিশে হস্তান্তর করেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন আমজাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি মনিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলায় জামিন নিতে আসা আসামির নথি দেখে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করেন। আদালতের নির্দেশে তাকে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়েছে।
আদালত এ সময় কোনো মন্তব্য করেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আদালত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জালের যে প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। এদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের বড় ঈদগাহ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী বাঁশবোঝাই একটি ট্রাক থামায় হাইওয়ে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে ট্রাকচালক আজিম উদ্দিন ও তার সহকারী মোতালেব হোসেন জানান, এই বাঁশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
তখন তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সিল ও স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি দেখান।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ড্রাইভার আজিম উদ্দিন জানান, চিঠিটি ট্রাকমালিক করিম মিয়া তাকে দিয়েছিলেন।
পুলিশের সন্দেহ হলে বাঁশভর্তি ট্রাক ও চিঠিটি জব্দ করে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া অঞ্চলের সুপার ও সহকারী পুলিশ সুপারকে জানানো হয়।
পুলিশ সুপার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী সামরিক সচিব মো. সাইফ উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল নন, তিনি কর্নেল। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ ধরনের কোনো চিঠি দেয়া হয়নি। তখন আটক ব্যক্তিরা স্বাক্ষর জালের কথা স্বীকার করেন।
পরে ট্রাকের মালিক করিম, ট্রাকচালক আজিম ও তার সহকারী মোতালেবের বিরুদ্ধে মামলা করেন রংপুরের পীরগঞ্জের বড়দরগাহ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন।
ট্রাকমালিক করিমের বাড়ি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর বালাপাড়া গ্রামে। ট্রাকচালক আজিমের বাড়ি একই উপজেলার উত্তর বত্রিশ হাজারী গ্রামে।