প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানকে জড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সেনা সদরদপ্তর।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবেদনটিকে ‘উদ্দেশ্যমূলক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেলে আল-জাজিরায় সম্প্রচার করা হয় ‘গ্যাং ক্লোজ টু বাংলাদেশ পিএম এক্সট্র্যাক্টস ব্রাইবস ফর স্টেট কন্ট্রাক্টস’ নামের প্রতিবেদনটি। প্রতিবেদনটি প্রচারের পর এটিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বলে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ঘটনাকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য বলে অভিহিত করে বিবৃতিও দেয়া হয়েছে।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চেষ্টা চালাচ্ছে এটি মূলত তাদেরই কাজ। এই প্রতিবেদনের ধারা বর্ণনাকারী ডেভিড বার্গম্যান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্ত। প্রতিবেদনে সামি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া জুলকারনাইন সায়ের খান মাদকাসক্তির কারণে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। এরা দুই জন এবং নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল মিলে দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নে এই প্রতিবেদনের পেছনে কাজ করেছেন, যা স্পষ্ট।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এটা পরিষ্কার নয়, কেন আল-জাজিরার মতো একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তাদের সঙ্গে কাজ করছে, যাদের সুস্পষ্ট ক্রিমিনাল রেকর্ড রয়েছে। বিভিন্ন দাপ্তরিক, সামাজিক ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের টুকরো টুকরো ভিডিও প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সংযোগহীন নানা ঘটনা নেপথ্য কণ্ঠের মাধ্যমে একত্রে সম্পাদনা করা হয়েছে।’
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে ইসরায়েল থেকে মোবাইল ফোনের ওপর নজরদারি চালানো যন্ত্র কেনার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘প্রকৃত সত্য হচ্ছে, এ ধরনের একটি যন্ত্র জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে যাওয়া একটি কন্টিনজেন্টের জন্য হাঙ্গেরি থেকে কেনা হয়েছিল। যন্ত্রের কোথাও লেখা নেই যে সেগুলো ইসরায়েলের তৈরি। যেহেতু ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তাই সেখান থেকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা/ক্রয়ের কোনো সুযোগও নেই।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ধারণা, এই প্রতিবেদনটি সেই কায়েমী গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা, যারা দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সুসম্পর্ক বিনষ্ট করতে চায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী চেইন অফ কমান্ড মেনে চলা সবচেয়ে সুশৃঙ্খল বাহিনী এবং সংবিধান ও সরকারের প্রতি অনুগত। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সবসময় শ্রদ্ধাশীল ছিল এবং থাকবে এবং মাতৃভূমির জন্য দেশ গড়ার প্রয়াস চালিয়ে যাবে।’