দেশে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত ২৭টি ক্ষেত্রে ১০.০৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) গ্যাস মজুত রয়েছে, যা ফুরাতে পারে ২০৩০ সালে।
একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনের প্রশ্নোত্তরপর্বে লিখিত উত্তরে এ তথ্য জানান বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তিনি জানান, দেশে বর্তমানে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা তিন হাজার ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। দৈনিক উত্পাদিত গ্যাসের পরিমাণ দুই হাজার ৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ ছাড়া দৈনিক ৫৯০ মিলিয়ন ঘনফুট সমপরিমাণ এলএনজি মিশিয়ে ৩ হাজার ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। এ হিসাবে দৈনিক ঘাটতি ৫৪০ মিলিয়ন ঘনফুট।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে ঘাটতি পূরণের জন্য অফশোর গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দৈনিক ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ল্যান্ড বেইজড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) ও টার্মিনাল ডেভেলপারস সিলেকশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আবাসিক খাতে গ্যাসের অপচয় রোধ ও জ্বালানির দক্ষ ব্যবহারে ইতোমধ্যে দুই লাখ ৭৩ হাজার ১০০টি প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। অন্যান্য আবাসিক গ্রাহকদের পর্যায়ক্রমে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে প্রিপেইড মিটারের প্রাপ্যতা সহজতর করতে বেসরকারি পর্যায়েও প্রিপেইড মিটার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক শ্রেণিতে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান আপাতত স্থগিত রয়েছ। তবে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কারাগার এই নির্দেশনার আওতার বহির্ভুক্ত। এ জন্য ঢাকা মহানগরীতে সরকারি-বেসরকারি নির্মিতব্য নতুন আবাসিক ভবনে গ্যাস সংযোগের সিদ্ধান্ত আপাতত নেই।
হাজি সেলিমের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, আইন অনুযায়ী এলপিজি গ্যাসের পাইকারি ও খুচরামূল্য নির্ধারণের কর্তৃত্ব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের। কমিশন পর্যায়ে মূল্য পুনর্নির্ধারণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ আবাসিকে
গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের ৫৭ শতাংশ আবাসিক খাতে, ১০ শতাংশ বাণিজ্যিক ও ২৮ শতাংশ শিল্প খাতে ব্যবহৃত হয়। গত ১০ বছরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ছয় হাজার ৭২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বৈশ্বিক মহামারির কারণে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কম। ফলে মেরিট অর্ডার ডেসপাচ অনুযায়ী কিছু কিছু তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছ। এ ছাড়া গ্যাসের স্বল্পতার কারণে কিছু কিছু গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আংশিক ক্ষমতায় চালু রয়েছে।
তিনি জানান, বৈশ্বিক মহামারি থেকে বিশ্ব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বিদ্যুতের চাহিদা এবং উৎপাদনক্ষমতার মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় থাকবে।