প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরায় প্রকাশিত প্রতিবেদনকে মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বলে উল্লেখ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ঘটনাকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য বলেও অভিহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় সোমবার বিকেলে আল-জাজিরায় সম্প্রচার করা হয় ‘গ্যাং ক্লোজ টু বাংলাদেশ পিএম এক্সট্র্যাক্টস ব্রাইবস ফর স্টেট কন্ট্রাক্টস’ নামের প্রতিবেদনটি।
বিষয়টি সরকারের নজরে এসেছে বলে জানানো হয় সোমবার রাত দেড়টার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে।
এতে বলা হয়, ‘নিউজটি বাংলাদেশ সরকারের গোচরীভূত হয়েছে, যা পুরোপুরি অসত্য, বানোয়াট ও মানহানিকর। রাষ্ট্র ও জনগণের প্রগতিশীল এবং ধর্মনিরপেক্ষ নীতির বিরোধিতা করে জামায়াতে ইসলামী ও চরমপন্থী গোষ্ঠীর দোসরদের অনুপ্রেরণায় সংবাদমাধ্যমটির এই প্রোপাগান্ডা, যা মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা ছাড়া কিছুই নয়।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, এই প্রতিবেদনে যে ঐতিহাসিক পরম্পরা তুলে ধরা হয়েছে, সেখানে ১৯৭১ সালের ভয়াবহ গণহত্যার কথা বলা হয়নি। বলা হয়নি, জামায়াতে ইসলামীর ক্যাডাররা কীভাবে লাখ লাখ নিরপরাধ বেসামরিক বাঙালিকে হত্যা করেছিল। লাখ লাখ নারীর সম্ভ্রম লুট করে অমানুষিক নির্যাতন করেছিল, তা বলা হয়নি।
‘এই প্রতিবেদনে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের চিত্র ফুটে উঠেছে। এর মূল ভাষ্যকার ডেভিট বার্গম্যান, যিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বহিষ্কৃত অপরাধী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ব্যক্তিদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক তোলায়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আল-জাজিরার এই প্রতিবেদনের মূল এই সোর্সকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আগেই ‘সাইকোপ্যাথ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এই ব্যক্তি তার অভিযোগের পক্ষে কোনো জোরালো প্রমাণ তুলে ধরতে পারেনি উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় বলেছে, একজন মানসিকভাবে অসুস্থ লোকের দেওয়া তথ্য প্রকাশ করে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছে আল-জাজিরা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিদেশে আশ্রয় নেওয়া সরকারবিরোধী কিছু বেপরোয়া ও চরমপন্থী মানুষ ও ’৭১-এর স্বাধীনতাবিরোধী মৌলবাদী চক্র এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে আল-জাজিরার মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে ভুলভাবে প্রভাবিত করছে।’