দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দুর্নীতির আরেক মামলায় আদালতে হাজির হতে হচ্ছে।
আগামী সোমবার নাইকো দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে স্বশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ এসেছে ঢাকার একটি আদালত থেকে।
সোমবার কেরানীগঞ্জের কারাভবনে নির্মিত ২ নম্বর ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এই আদেশ দেন।
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বিএনপি নেত্রী এই মামলায় নিয়মিত হাজিরা থেকে বিরত আছেন। তার আইনজীবীরা তারিখ এলেই সময়ের আবেদন করেন। ফলে মামলার বিচার বিলম্বিত হচ্ছে।
আজও খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবা আবার সময়ের আবেদন করেন। পাশাপাশি মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আরও একটি আবেদন জমা দেন।
বিচারক সময় আবেদন গ্রহণ করে ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য তারিখ দেন। ওই দিন মামলার সব আসামিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিএনপি নেত্রীর আইনজীবী জিয়াউদ্দিন জিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী তারিখে বেগম খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হলে আমরা মামলা থেকে তাকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে শুনানি করব।’
কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতি ও দুর্নীতির অভিযোগে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, তৎকালীন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এএইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ৷
এর মধ্যে এ কে এম মোশাররফ হোসেনের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। সেদিনই তাকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে দণ্ড বেড়ে হয় ১০ বছর। পাশাপাশি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড হয় তার।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর দণ্ড ছয় মাস স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। পরে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।