গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় দুই দশক আগে ৭৬ কেজি বোমা পুঁতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জনের সাজা বহাল থাকছে কি না, তা জানা যাবে ১৭ ফেব্রুয়ারি।
মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১০ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি শেষে সোমবার রায়ের দিন রাখে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ভাষার মাস উপলক্ষ্যে রায় বাংলায় ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়ে দেন আদালত।
গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের অসমাপ্ত বক্তব্যের জন্য ১ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছিলেন আদালত। এদিন রাষ্ট্রপক্ষের পুরো বক্তব্য শুনে রায়ের দিন ঠিক করা হলো।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল।
আসামিপক্ষে ছিলেন মো. নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আহসান।
মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির সর্বোচ্চ শাস্তি দেন। আদালত গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। এ ছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মো. রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মো. ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
পাশাপাশি আসামি মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেয়া হয়।
মামলার রায়সহ সব নথি ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে আসে। এরপর প্রধান বিচারপতির নির্দেশে পেপারবুক তৈরি হলে হাইকোর্টে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। কিন্তু হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ কয়েকবার পুনর্গঠন হওয়ায় মামলাটির শুনানি বেশ কয়েকবার পিছিয়ে যায়।
২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে মামলায় বলা হয়।
এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন একটি মামলা করেন। পরে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয় জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়।