দ্রুত করোনাভাইরাসের গণটিকা প্রয়োগের পরামর্শ দেয়া হয়েছে গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক আয়োজনে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আলোচকরা জানান, সাউথ আফ্রিকায় করোনা ভাইরাসের যে নতুন ধরন পাওয়া গেছে, সেটির সঙ্গে মিল থাকা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশেও খুঁজে পাওয়া গেছে।
গবেষণাটি করেছে গণস্বাস্থ্য-আরএনএ মলিকুলার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি বিভাগের গবেষকরা।
সোমবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নগর হাসপাতালে এই মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
গবেষকরা বলেন, বাংলাদেশে সাউথ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়া ভাইরাস সদৃশ্য মিউটেশন পাওয়া যাওয়ার বিষয়টি টিকা উৎপাদকদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।
তারা বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত এর বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করবে। টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকেও ভ্যাকসিনের চরিত্র পরিবর্তন করতে হবে।
একজন বক্তা বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাক্সিনেশন শেষ করার। যত দ্রুত আমরা জনগণকে টিকা দিতে পারব তত তাড়াতাড়ি রোগ ছড়িয়ে পড়া বাধাগ্রস্ত হবে।’
বাংলাদেশে করোনার টিকা প্রয়োগের উদ্বোধন করা হলেও গণ টিকা প্রয়োগ শুরু হচ্ছে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। দেশে এই মুহূর্তে ৭০ লাখ টিকা আছে। প্রতি মাসে আসবে আরও ৫০ লাখ করে টিকা আসবে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্স থেকে বাংলাদেশ টিকা পাবে আরও পৌনে সাত কোটি। আগামী জুন থেকেই এগুলো দেশে আসা শুরু বলে আশাবাদী সরকার।
দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে চায় সরকার। তবে ১৮ বছরের কম, গর্ভবতী, অনিয়ন্ত্রিক ডায়াবেটিকের রোগী ও গুরুতর অসুস্থদের টিকা দেয়া হবে না।
আলোচনায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী টিকা উৎপাদনে গবেষণায় জোর দেয়ার অনুরোধ করেন। বলেন, গবেষণায় সহায়তা দিলে বাংলাদেশ নিজেই টিকা উৎপাদন করতে পারবে।
বাংলাদেশের ৪৩ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভকে ‘অত্যন্ত ভালো খবর’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারকে অনুরোধ করছি, মাত্র হাফ বিলিয়ন ডলার সরকার গবেষণার জন্য বিনিয়োগ করুক। আমাদের প্রতিটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে পারবে। তাদেরকে গবেষণার সুযোগটা করে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ গবেষকরা যতগুলো ভ্যাকসিনের নাম শুনেছেন, ছয় মাসের মধ্যে সবগুলো তৈরি করা সম্ভব।’
প্রয়োজনে বিদেশ থেকেও গবেষক আনা যায় বলেও মন্তব্য করেন জাফরুল্লাহ।
গণস্বাস্থ্য সামাজিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান মামুন মোস্তাফী, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান মাহবুবুর রহমান, ব্রাক ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রায়েদ জমিরউদ্দিন, সহকারী অধ্যাপক নীহাদ আদনান, গণস্বাস্থ্যের করোনা কীটের সমন্বয়ক মুহিব উল্লাহ খোন্দকারও এ সময় বক্তব্য রাখেন।