সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনে ৪২ বিশিষ্ট ব্যক্তির দাবিকে অযৌক্তিক বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সোমবার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, ‘দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যে অভিযোগপত্র দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞজনেরা মনে করেন ওই দাবি অযৌক্তিক। এমন দাবি করার মানে রাষ্ট্রের অভিভাবক, সংবিধানের রক্ষক রাষ্ট্রপতিকে বিব্রত করা।
‘যারা মনে করেন নির্বাচন কমিশনের কারণে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, নির্বাচন নিয়ে তাদের অতীতের অভিজ্ঞতা তা প্রমাণ করে না।’
তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে। ব্যক্তিবিশেষ অনিয়ম করলে দুদক তদন্ত করতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে দায়ী করা অপ্রত্যাশিত ও অযৌক্তিক।
‘প্রজাতন্ত্রের কোনো ব্যক্তি অনিয়ম-দুর্নীতির ঊর্ধ্বে নয়। যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে তদন্ত করার দায়িত্ব স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের আছে। নির্বাচন কমিশন চাপমুক্ত থেকে নিজস্ব আইনগত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অনুযায়ী অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করতে পারে।’
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচারণের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে রোববার দ্বিতীয়বারের মতো চিঠি দেন ৪২ নাগরিক।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিকের সই করা ওই চিঠি বঙ্গভবনে পাঠানো হয়।
এর আগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর যারা চিঠি দিয়েছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, আকবর আলি খান ও সুলতানা কামাল, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, কামাল হোসেনের স্ত্রী হামিদা হোসেন, কামাল হোসেনের মেয়ে সারা হোসেন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম ও আহসান এইচ মনসুর, উন্নয়নকর্মী বদিউল আলম মজুমদার, রাশেদা কে চৌধুরী, খুশী কবীর, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী শাদহীন মালিক, বামপন্থি রাজনীতিক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম।
সোমবারের প্রেস ব্রিফিংয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আবারও কঠোর অবস্থানের কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘অনেক স্থানে বিদ্রোহীরা সরে দাঁড়ালেও কোথাও কোথাও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেখা গেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনবিষয়ক দলীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তা দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘন বলে ধরে নেয়া হবে।
‘যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন, তাদের ভবিষ্যতে বিভিন্নভাবে মূল্যায়ণ করা হবে। যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, তারা ভবিষ্যতে মনোনয়ন তো পাবেনই না, উপরন্তু দলের কোনো সম্মানজনক পদও পাবেন না।’
দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করার আহবান জানান কাদের।
তিনি বলেন, ‘দলের বিষয়ে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে, তা অভ্যন্তরীণ ফোরামে আলোচনা করা যাবে। দলীয় ফোরামের বাইরে গিয়ে কোনো ধরনের বক্তব্য বা বিবৃতি শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।
‘দলের ইমেজ নষ্ট হয় এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দলীয় শৃঙ্খলা এবং ঐক্যের বিষয়ে অধিকতর কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।’