বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এক বছরে দেশে ঢুকেছে প্রায় ৩৩ কোটি ইয়াবা

  •    
  • ৩১ জানুয়ারি, ২০২১ ০৮:১৮

সীমান্ত পার হয়ে আসার পর প্রথম হাত বদলের সময় প্রতি পিস ইয়াবার দাম পড়েছে গড়ে ৩০ টাকা। সে হিসাবে ৩৩ কোটি পিস ইয়াবার দাম প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এই টাকার পুরোটাই পাচার হয়েছে মিয়ানমারে।

মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন দেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হিসেবে গত আট বছরে মিয়ানমার থেকে দেশে ইয়াবার পাচার বেড়েছে ৯৮ শতাংশ।

ইয়াবার মূল উপাদান সিউডোফেড্রিন বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলেও তা চীন ও ভারত থেকে সরকারিভাবে আমদানি করছে মিয়ানমার। আর এই উপাদানের সহজলভ্যতার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ঘেঁষে দেশটির সীমান্তবর্তী এলাকায় অসংখ্য কারখানা গড়ে তুলেছেন ইয়াবা কারবারিরা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, গত ১ বছরে মিয়ানমার থেকে দেশে প্রায় ৩৩ কোটি পিস ইয়াবা ঢুকেছে। সীমান্ত পার হয়ে আসার পর প্রথম হাত বদলের সময় প্রতি পিস ইয়াবার দাম পড়েছে গড়ে ৩০ টাকা। সে হিসাবে ৩৩ কোটি পিস ইয়াবার দাম প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। এই টাকার পুরোটাই পাচার হয়েছে মিয়ানমারে।

কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে ঢুকে এসব ইয়াবা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। এর কিছু ধরা পড়লেও বড় চালানগুলো থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।

ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবার প্রতিটি চালান পৌঁছে দিতে দুই দেশের যৌথ সিন্ডিকেট কাজ করে। বাংলাদেশি কারবারির কাছ থেকে অর্ডার পেয়ে সীমান্তের ওপারে চালান প্রস্তুত করেন ইয়াবা কারখানা মালিক। তার কাছ থেকে চালান বুঝে নেন মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার দায়িত্বে থাকা কারখানা মালিকের একজন কো-অর্ডিনেটর।

এই কো-অর্ডিনেটরের কাছ থেকে চালান বুঝে নিয়ে সমুদ্রপথের ক্যারিয়ার (ট্রলার বা নৌকার মাঝি) তা পৌঁছে দেন টেকনাফ বা কক্সবাজার এলাকার স্থানীয় ডিলারের কাছে। সেখান থেকে বিভিন্ন ক্যারিয়ারের মাধ্যমে ছোট ছোট লটে ইয়াবার চালান চলে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ডিলারদের কাছে। ডিলাররা তা ছড়িয়ে দেন খুচরা বিক্রেতাদের হাতে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, মিয়ানমারের কারখানা মালিককে চালানের অর্ডার দেয়া মূল ইয়াবা কারবারি কখনওই এই প্রক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত থাকেন না; তিনি নিজে ইয়াবার চালান গ্রহণও করেন না। তার বলে দেয়া জায়গায় বা ব্যক্তির কাছে কো-অর্ডিনেটর আর মাঝির মাধ্যমে চালান পৌঁছে দেন কারখানা মালিক। এ কারণে মূল কারবারিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অবস্থান চিহ্নিত হওয়া এড়াতে মিয়ানমারের কারখানা মালিকরা কখনই সরাসরি বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ইয়াবার চালানের দাম নেন না। ডিলাররা এই অর্থ পাঠান অন্য দেশে। দুবাই, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুর হয়ে সেই অর্থ পৌঁছায় মিয়ানমারে। এছাড়া মাঝেমধ্যে অর্থের বদলে ইলেকট্রনিক, ওষুধ, স্বর্ণালঙ্কারসহ বিভিন্ন পণ্যের বিনিময়ে আসে ইয়াবা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইয়াবার গডফাদাররা দেশে বা বিদেশে অবস্থান করে চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করেন। বেশির ভাগ সময় তারা থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ধরা পড়েন মূলত ক্যারিয়ার ও খুচরা কারবারিরা। তাদের থেকে শুরু করে বড় বড় ডিলারদের অনেকেই ব্যাংকে বিভিন্ন জনের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে টাকার লেনদেন করেন। অনেক সময়ে হাতে হাতেও চলে লেনদেন।’

এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইয়াবা কারবারিদের তালিকা ধরে তাদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। আমরা উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ পেলে অপরাধে জড়িতদের আটক করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘ইয়াবার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয় বলে সবসময় সব অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রমাণ যোগাড় করা কঠিন। এরপরেও আমরা বসে থাকছি না, কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের লেনদেনে অসামঞ্জস্য দেখা গেলে অনুসন্ধান করে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর