চট্টগ্রাম থেকে রোহিঙ্গাদের আরও একটি দলকে নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বোট ক্লাব এলাকা থেকে চারটি জাহাজ রোহিঙ্গাদের নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা করে।
জাহাজে ১ হাজার ৭৭৮ জন রোহিঙ্গা সেখানে যাচ্ছেন বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার ৩৮টি বাসে করে তাদের চট্টগ্রামে আনা হয়।
রিয়ার অ্যাডমিরাল মোজাম্মেল হক বলেন, ‘শুক্রবার আরও ১ হাজার ৩০০ জনকে চট্টগ্রামে আনা হবে। এদের শনিবার নৌবাহিনীর জাহাজে নোয়াখালীর ভাসানচরে পাঠানো হবে।’
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছুর-দ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘তৃতীয় দফায় অন্তত ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। শুধু উখিয়া কলেজ মাঠ ও বালুখালী ক্যাম্প থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ভাসানচরে যাবে রোহিঙ্গারা।’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম বলেন, ‘নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, তৃতীয় দফায় প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গাকে আনা হচ্ছে। এর মধ্যে শুক্রবার ১ হাজার ৭০০ জন রোহিঙ্গা চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরে আসবে। অন্যদের আনা হবে শনিবার।’
গত বছরের ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই দফায় ৩ হাজার ৪৪৬ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হয়। এ ছাড়া মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে ভাসানচরে নেয়া হয়।
নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হাতে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে আসছেন মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। তবে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় ঢল আসা শুরু হয় ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট।
ওই সময় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর চাপের মুখে পড়েও রোহিঙ্গাদের ফেরত নিচ্ছে না মিয়ানমার। উল্টো রোহিঙ্গাদের তাদের দেশের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
অন্যদিকে রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে মেঘনা নদীর নোয়াখালী অংশে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
এ জন্য নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রাম করা হয়েছে।