নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ পিছিয়েছে।
আগামি ২১ মার্চ নতুন তারিখ দিয়েছে আদালত।
ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নতুন তারিখ ঠিক করেন।
বৃহস্পতিবার পাপিয়া ও সুমনের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার কথা থাকলেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত প্রতিবেদনটি আদালতে জমা দিতে পারেনি।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল নগদে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিংও করেন। এসবের কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছর বাসা ভাড়াবাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে পাপিয়ার বাসা থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) উদ্ধার করা ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা ও সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের গাড়ি কেনার ২২ লাখ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুরকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার বিমানবন্দর থেকে আটক করে র্যাব-২। এ সময় সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, জাল ২৫ হাজার ৬০০ টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, শ্রীলঙ্কান ৪২০ মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, যুবলীগ নেত্রী পাপিয়া পিউ নামেই বেশি পরিচিত। এই নেত্রীর প্রকাশ্য আয়ের উৎস গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। তবে এর আড়ালে তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করতেন। কোনো কাজ বাগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাঁচতারকা হোটেলে সুন্দরী তরুণীদের পাঠিয়ে মনোরঞ্জন করতেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ও ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়।