জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে হাসপাতাল। ব্যক্তি উদ্যোগে এটি নির্মাণ করা হয় ১৯৯৫ সালে। লক্ষ্য ছিল হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। কিন্তু যাত্রা শুরুর পর থেকেই নানা সংকটে ভুগছে হাসপাতালটি।
প্রতিষ্ঠানটির পূর্ণনাম বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতাল। অবস্থান রংপুরের মাহিগঞ্জে। নিজস্ব অর্থায়নে হাসপাতালটি নির্মাণ করেন বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পরে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় রংপুর পৌরসভাকে। ২০১২ সাল থেকে এর দেখভাল করছে সিটি করপোরেশন।
মাস দেড়েক আগে হাসপাতালটি লিজ দিয়েছে সিটি করপোরেশন। রংপুর চেম্বারের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম এটি লিজ নিয়েছেন। এতে অবশ্য সুপারিশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। হাসপাতাল পরিচালনায় পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
তবে লিজ বাতিল করে হাসপাতালটি সরকারিভাবে চালু করে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে মহানগর নাগরিক কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসক ও সিটি মেয়রের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর মাহিগঞ্জে এক সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি হাসপাতালটি সরকারিকরণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এর ঠিক দেড় বছরের মাথায় এটি লিজ দেয়া হলো।
সিটি মেয়র মোস্তফা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, এই হাসপাতাল পরিচালনার জন্য মাসে অন্তত ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন, যা সিটি করপোরেশনের নেই। তাই বাণিজ্যমন্ত্রীর সুপারিশে এটি লিজ দেয়া হয়েছে। ফেলা রাখার চেয়ে চালু থাকলে, মানুষ যেমন সেবা পাবেন, তেমনি সিটি করপোরেশনের কিছু আয় হবে। এই ভেবে লিজ দেয়া হয়েছে।
রংপুর মহানগর নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মোজাহার আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন মাহিগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ফলে মাহিগঞ্জসহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বেসরকারি উদ্যোগে হাসপাতাল পরিচালিত হলে মুনাফা অর্জনই হবে প্রধান লক্ষ্য। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
‘এই এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি উদ্যোগে হাসপাতালটি পরিচালনার দাবি জানিয়ে আসছে। গণদাবিকে উপেক্ষা করে বেসরকারি খাতে হাসপাতাল পরিচালনার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী।’
বন্ধ থাকার প্রায় ১০ মাস পর গত বছরের ১১ আগস্ট রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের উদ্যোগে হাসপাতালে টিকাদান কর্মসূচি চালু হয়। এর আগে হাসপাতালটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে আরবান হেলথ কেয়ার নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। পরে নিজস্ব ভবনে চলে যায় সংস্থাটি। এর পর থেকেই বঙ্গবন্ধুর নামে করা এই হাসপাতাল ভবন পড়ে আছে অযত্ন-অবহেলায়।