বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুয়েকটি ভুলে প্রশ্নবিদ্ধ দুদক: হাইকোর্ট

  •    
  • ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:০৯

দুদকের ‘সরল বিশ্বাসে’ ভুল তদন্তের শিকার নোয়াখালীর কামরুল ইসলামের বিষয়ে শুনানিকালে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনেক ভালো কাজ করছে উল্লেখ করে হাইকোর্ট বলেছে, তাদের (দুদক) দুয়েকটি ভুল পুরো কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

দুদকের ‘সরল বিশ্বাসে’ ভুল তদন্তের শিকার নোয়াখালীর কামরুল ইসলামের বিষয়ে শুনানিকালে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলে, সবারই সম্পত্তির হিসাব বিবরণী দেয়া উচিত। দুদকের কমিশনারসহ সব কর্মকর্তা-কর্মচারী জনসমক্ষে হিসাব বিবরণী প্রকাশ করলে তাদের (দুদক) গ্রহণযোগ্যতা মানুষের কাছে আরও বাড়বে।

আদালত বলেছে, দুয়েকটি ভুলের কারণে গোটা প্রতিষ্ঠান কীভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

‘কিছু কিছু লোক আছে, কিছু কিছু জায়গা আছে। তাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা থাকে, তাদেরকে ফেরেশতার মতো থাকতে হবে।’

আদালতে রিট আবেদনকারী যুবকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান

সকালে এ মামলার শুনানিতে আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী বলেন, আসামির ঠিকানা পরিবর্তন হওয়াতে আসামি বদলে গেছে। এখন যাকে আসামি করে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ খুঁজছে, ঘটনার সময় তার বয়স ছিল আট বছর। মূল আসামির জন্ম ১৯৭৭ সালে। আর রিটকারীর জন্ম ১৯৯০ সাল।

তিনি বলেন, ‘দুদকের বিশেষ আইনে প্রথমেই একটি অনুসন্ধানের বিধান আছে। অন্যান্য অপরাধের মতো সরাসরি এফআইআর হয় না। এখানে এফআইআর হবে তাদের অনুসন্ধানের পরে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, প্রশংসাপত্র জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। সেখানে আসামির নাম, পিতার নাম-ঠিকানা পরিপূর্ণভাবে দেয়া আছে।

‘তারপরও তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম, প্রথম এফআইআরে ভুল হতে পারে। কিন্তু সেটিও সংশোধনের সুযোগ থাকে। উনারা ১০ বছর তদন্ত করলেন। এফআইআর হয় ২০০৩ সালে। পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করে ২০১৩ সালে। প্রায় ১১ বছর।’

দুদকের ‘সরল বিশ্বাসে’ সাজা পাওয়া কামরুল। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘দুদক আইনের বিধিতে আছে, তদন্তকারী আসামি খোঁজ করবেন, তার সাক্ষ্য নিবেন। তদন্তকারী মনে করলে তার শুনানি করবেন। প্রতি মাসে তার প্রতিবেদন কমিশনের দাখিল করবেন। কমিশন সেই প্রতিবেদন অনুমোদন করবেন।

‘সরল বিশ্বাসে দুদক ভুল করেছে এই বক্তব্যের সঙ্গে আমি একমত না। এত বছর তদন্ত করে তিনি পূর্ব, না পশ্চিম কিছুই পেলেন না। আসলে তদন্তকারী কিছুই করেননি। এটা অপেশাদার কাজ-কর্ম। আর যদি জেনে করেন তাহলে অসততা।’

এসব বিবেচনায় নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রার্থনা করেন এই আইনজীবী।

এরপর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘এই মামলাটি হলো দুর্নীতি দমন ব্যুরোর। এই তদন্তকারী ১০ বছর তদন্ত করেছেন, এটা ঠিক না। উনি ছিলেন শেষ তদন্ত কর্মকর্তা। আর এটাই উনার প্রথম তদন্ত।’

তখন আদালতের বিচারক বলেন, ‌‘তাহলে এই তদন্তকারী কবে দায়িত্ব পেয়েছেন? ’

জবাবে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার কাছে সে তথ্যটি নাই। তবে সময় দিলে দেখে বলতে পারব। মামলাটি ব্যুরো আমলের।’

এ পর্যায়ে আদালত বলে, ‘ব্যুরো আমলের হোক, বর্তমান কমিশন তো সব কিছু বুঝেই নিয়েছে।’

তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বিশেষ জজ যদি এটা যাচাই-বাছাই করত, তাহলে এমনটি হতো না।

আদালত বলে, ‘চার্জশিটে তদন্তকারী যে ঠিকানা দিয়েছে, সে অনুযায়ী প্রসিডিং হবে। তদন্তকারীর দোষ, প্রসিকিউশনের দোষ। আপনাদের প্রসিকিউটরেরও দায় নিতে হবে। এখন সব দোষ জজ সাহেবে ওপর দিচ্ছেন।’

এটা তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রথম তদন্ত। এই কারণে এটা আরও ভালো করা উচিত ছিল বলেও উল্লেখ করেন আদালত।

এ সময় আদালত আরও বলে, ‘বিভিন্ন মিডিয়ায় এই মামলা সম্পর্কে রিপোর্ট হয়েছে। দুয়েকটি ভুলের কারণে গোটা প্রতিষ্ঠান কীভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিছু কিছু লোক আছে, কিছু কিছু জায়গা আছে, মানুষের প্রত্যাশা থাকে, তাদের ফেরেশতার মতো থাকতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর