চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে রক্তাক্ত নির্বাচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন গতকাল (বুধবার) চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে যা হয়েছে আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন। একেবারে রক্তাক্ত নির্বাচন হয়েছে। দুই জন কিংবা তিন জন মারা গেছে।
বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপরসনের কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নীলফামারী জেলা শাখার আহ্বায়ক সাবেক হুইপ শওকত চৌধুরীর বিএনপিতে যোগদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ফখরুল।
বুধবার একপেশে ভোটে বিশাল ব্যবধানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী।
ভোট চলাকালে বিএনপির কোনো এজেন্টকে কেন্দ্রে থাকতে দেয়া হয়নি, তাদের শারীরিক অত্যাচার করে বের করে দেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দুঃখজনক হলো, এখন নির্বাচনগুলোতে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন আর আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন পুলিশ প্রশাসন।
নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার কোনো ব্যক্তিত্ব নেই। সংবিধান অনুসারে তার এই প্রতিষ্ঠানকে চালানোর কোনো ক্ষমতা নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনকে আমরা সব সময় বলে আসছি, এটি নিরপেক্ষ কোনো সংগঠন নয়। প্রতিষ্ঠানটি এখন আওয়ামী লীগের একটা লেজুড়বৃত্তির সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
নির্বাচনে অংশ নেয়ার যুক্তি সম্পর্কে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকে বলেন এই নির্বাচন করার কি যুক্তি আছে? আমরা বলি, এই নির্বাচনকে আমরা গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটা অংশ হিসাবে দেখি। এটা আমাদের একটা পার্ট। আমরা এটার মাধ্যমে আমাদের নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ত করতে পারি।
‘আবার আমরা এর মাধ্যমে জনগণের কাছে যেতে পারি। যেটা অন্য সময় যাওয়া খুব কঠিন। কারণ মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ কিছুই করতে দেয় না। যেটা গণতান্ত্রিকতার ন্যূনতম একটা অধিকার মাত্র। যেটাকে আমরা বলি ডেমোক্রেটিক স্পেস। আর সেই স্পেসকে তারা নিয়ে নিয়েছে। এই কারণেই আমরা নির্বাচনে যাই।’
বাংলাদেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র চায় মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শওকত চৌধুরীর বিএনপিতে যোগদানের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন কথা বলতে চায়। তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে এমন একজন সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে, তারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গফুর সরকার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর জেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলামসহ অনেকে।