রাজধানীর পাঁচ হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক মানুষকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার পর টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তিকে করোনার টিকা দেয়া হবে।
টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাসেবকেরা কাজ করছেন। টিকা নেয়ার পর পর্যবেক্ষণ ও বিশ্রামের জন্য আলাদা জায়গা রাখা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।
সকাল ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াকে টিকা দেয়ার মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়।
বিএসএমএমইউর উপাচার্যের পর টিকা নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিন ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান।
পরে টিকা নেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও স্বাস্থ্যসচিব আব্দুল মান্নান।
দুপুর ১টার দিকে টিকাদান কর্মসূচি পরিদর্শনে যান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিএসএমএমইউর জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার বলেন, প্রথম দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, চিকিৎসক, আবাসিক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের করোনার টিকা দেয়া হবে।
এদিকে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে টিকা দেয়া শুরু হয়। এ কেন্দ্রে প্রথম টিকা নেন ডা. ফরহাদ উদ্দিন হাসান চৌধুরী।
ফরহাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অন্য ৫-১০টা টিকার মতো করোনার টিকা নিয়ে অস্বাভাবিক বোধ করছি না। দেশবাসীর উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা টিকা নিন। বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়াবেন না।’
ঢামেক হাসপাতালে ১৪০ স্বাস্থ্যকর্মী করোনার টিকা নেবেন। এদের মধ্যে ২০ জন চিকিৎসক ও ২০ জন নার্স রয়েছেন। বাকিরা হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী ও স্টাফ। সেখানে চারটি টিকা দেয়ার বুথের মধ্যে দুটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত।
হাসপাতালটিতে বিশেষজ্ঞসহ ২৩ চিকিৎসক টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘টিকা দেয়ার পর প্রত্যেককে আধা ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কোনো ধরনের অসুবিধা হলে প্রস্তুত রাখা হয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স।’
মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, হাসপাতালের বহির্বিভাগের তৃতীয় তলায় করোনার টিকা দেয়া হবে। প্রথম দিন ৬২ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনার টিকা নেবেন।
এদের মধ্যে পাঁচ জন চিকিৎসক। অন্যরা হাসপাতালের নার্স ও কর্মকর্তা। টিকা সংরক্ষণের জন্য দুটি ঘর আছে। টিকা দিতে দুটি বুথ, বিশ্রামঘর ও আইসিইউর ব্যবস্থা রয়েছে।
মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আবু সাঈদ শিমুল বলেন, ‘আজ এ হাসপাতালে বাইরের কাউকে টিকা দেয়া হচ্ছে না। হাসপাতালের নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী সব মিলে ৬২ জন টিকা পাবেন।’
গতকাল বুধবার উদ্বোধনের পর দ্বিতীয় দিনের মতো কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চলছে টিকাদান কর্মসূচি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ কার্যক্রম শুরু হয়।
আজ হাসপাতালের প্রায় ৫০০ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে করোনা টিকা দেয়া হবে।
ওই চারটি হাসপাতালের মতো কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় করোনার টিকাদান কর্মসূচি।
কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ৬২ জনের বেশি মানুষকে করোনার টিকা দেয়া হবে।