দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভুল তদন্তে সাজা পাওয়া কামরুল ইসলাম বলেছেন, দুদকের ভুলে এমন হয়রানির শিকার যেন কেউ আর না হয়।
দুদকের ‘সরল বিশ্বাসে’ দেয়া সাজা বাতিলের পর নোয়াখালী থেকে ফোনে জানানো প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
কামরুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে অনেক কষ্টে ছিলাম। অনেক টাকা-পয়সাও খরচ হয়েছে। অপরাধ না করেও সাজার দণ্ড মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যে কত কষ্টের, তা বলে বোঝানো যাবে না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার কামরুল ইসলামকে দেয়া সাজা বাতিল করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তদন্তকারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ারও নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত।
রায়ের খবর শুনে কামরুল বলেন, ‘আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। উচ্চ আদালতের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমার আইনজীবীকেও ধন্যবাদ জানাই।
‘যেদিন থেকে শুনেছি, পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করার জন্য খুঁজছে, সেই দিন থেকেই আমার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কেন পুলিশ আমাকে খুঁজবে? অপরাধ না করেও কেন আমাকে সাজা দেবে? পরে সাজার রায় মাথায় নিয়েই আমি উচ্চ আদালতে গিয়েছি।’
দুদকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের আবেদন করবেন কি না এ প্রশ্নের উত্তরে কামরুল জানান, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
দুদক ১০ বছর ধরে তদন্ত করে কামরুলের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেয়, যার অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতাই নেই। আদালত সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিচার করে ১৫ বছরের সাজা ঘোষণা করে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় কামরুলের বিরুদ্ধে।
এই পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে কামরুল হাইকোর্টের শরণাপন্ন হন।
এ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করে নিউজবাংলা।
আদালতে দুদক স্বীকার করেছে, তাদের ‘সরল বিশ্বাসে’ চলা তদন্তে ভুল হয়েছে। হাইকোর্টে ক্ষমা চেয়ে সংস্থাটি বলেছে, গ্রামের নামে সামঞ্জস্যের কারণে আসল অপরাধীর পরিবর্তে ভুল ব্যক্তির নামে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।
দুদকের একই ধরনের ‘সরল বিশ্বাসে’র তদন্তের জেরে এর আগে ১ হাজার ৯২ দিন জেল খেটে মুক্তি পান নিরপরাধ জাহালম। ২০১৯ সালে জাহালমের সাজা খাটার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। হাইকোর্ট জাহালমকে মুক্তির আদেশ দেয়ার সময় দায়িত্বহীনতার জন্য দুদককে তিরস্কার করেছিল।