বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে ইয়াবার ৪৮ কারখানা

  •    
  • ২৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০৮:৪৬

বাংলাদেশ সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা বানানোর ৪৮টি কারখানার মধ্যে ৩৭টির নাম ও ঠিকানা লিখিতভাবে মিয়ানমারের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনকে (ডিইডি) দেয়া হয়েছে। এসব কারখানা থেকে ১৭ ধরনের ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসছে।

মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন উপায়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ ঢুকছে ইয়াবার চালান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির পরও চলছে মাদকের এ কারবার।

বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হিসাবে শুধু মিয়ানমার সীমান্ত এলাকাতেই আছে অন্তত ৪৮টি ইয়াবা কারখানা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এর মধ্যে ৩৭টির সুনির্দিষ্ট অবস্থান চিহ্নিত ও মিয়ানমারের ১২ ইয়াবা কারবারির তালিকা করেছে বাংলাদেশ।

এই তালিকা এরই মধ্যে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও মিয়ানমারের সেন্ট্রাল কমিটি ফর ড্রাগ অ্যাবিউজ কন্ট্রোলের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে মাদক কারবার নিয়ে তথ্য বিনিময়ের সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই মিয়ানমারের ইয়াবা কারখানা ও কারবারিদের তালিকা পাঠায় বাংলাদেশ।

ওই তালিকা ধরে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারের প্রতি অনুরোধও জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা বানানোর ৪৮টি কারখানার মধ্যে ৩৭টির নাম ও ঠিকানা লিখিতভাবে মিয়ানমারের ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনকে (ডিইডি) দেয়া হয়েছে। এসব কারখানা থেকে ১৭ ধরনের ইয়াবা বাংলাদেশে পাচার হয়ে আসছে।

ওই কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমারের রাখাইন, মংডু ও শান এলাকায় রয়েছে ইয়াবার কারখানাগুলো। সেগুলোর নিয়ন্ত্রণে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী বিভিন্ন সংগঠন ও মাদক কারবারিরা।

এর মধ্যে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গ্রুপ কাচিন ডিফেন্স আর্মির (কেডিআই) আছে ১০টি ইয়াবা কারখানা। এই বাহিনী নিয়ন্ত্রিত কুখাই এলাকায় পানসাই খেও মেও ইয়াং মৌলিয়ান গ্রুপের অধীনে সীমান্ত এলাকা নামখামে দুটি, হো স্পেশাল পিলিস জে হোলি ট্রাক্ট গ্রুপের অধীনে কুনলং এলাকায় একটি, মং মিল্লিটা শান স্টেট আর্মির (নর্থ) অধীনে ১ নম্বর ব্যারিকেড ট্যানগিয়ান এলাকায় একটি, আনজু গ্রুপের একটি কারখানা আছে।

শান ন্যাশনালিটিজ পিপল লিবারেশন (এসএনপিএল) গ্রুপের নামজাং এলাকায় দুটি, একই গ্রুপের মাহাজা ও হোমোং এলাকায় দুটি, ইউনাইটেড ‍উই স্টেট আর্মি (ইউডব্লিউএসএ) গ্রুপের মংটন এলাকায় তিনটি, একই গ্রুপের মংসাত এলাকায় আরও দুটি এবং ত্যাছিলেক এলাকায় তিনটি এবং মংইয়াং এলাকায় চারটি কারখানা রয়েছে।

এ ছাড়া পাংসাং এলাকায় আরও দুটি কারখানা রয়েছে বলে তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে। শান ন্যাশনাল পিপল আর্মির মওখামি এলাকায় দুটি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএ) কোকান এলাকায় একটি ইয়াবা তৈরির কারখানা রয়েছে।

বাংলাদেশে নিয়মিত ইয়াবা চালান পাঠানো ১২ কারবারির নামের তালিকাও মিয়ানমারের কাছে দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এরা সবাই রোহিঙ্গা এবং তারা মিয়ানমার থেকেই মাদক কারবার চালাচ্ছে।

এদের কেউ কেউ বাংলাদেশের মোবাইল সিম ব্যবহার করছে বলে নিশ্চিত করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ওই কর্মকর্তা।

এই ১২ ইয়াবা কারবারি হলেন মংডুর আকিয়াব এলাকার সাঈদ, মংগোলা এলাকার আলম, গাজুবিল এলাকার কালাসোনা, মহিবুল্লাহ, দইলাপাড়া এলাকার আব্দুর রশীদ, বাদগাজুবিলিং এলাকার নূর, গুনাপাড়া এলাকার হারুন, সুদাপাড়া এলাকার আলী জহুর, ফাইজাপাড়া এলাকার সৈয়দ করীম, গুনাপাড়া এলাকার জায়ার, নূরুল ইসলাম ও শাফি।

তালিকা হস্তান্তরের পাশাপাশি তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে মিয়ানমারকে অনুরোধ জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহসানুল জব্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে দুই দেশের মহাপরিচালকদের সম্মেলনে কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়, যার একটি হলো তথ্যের আদান-প্রদান। সে অনুযায়ী আমরা আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পাওয়া নাম-ঠিকানাগুলো দিয়েছি। সেগুলোর বিষয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।’

তিনি বলেন, ‌‘২০১২ সাল থেকে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসা বাড়ছে। কয়েক বছর ধরে ইয়াবার চালান আসার হার বেড়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। আমরা নামের তালিকার সঙ্গে এই অভিযোগ দিয়ে মিয়ানমারকে চিঠি দিয়েছি। এখন দেখা যাক তারা কী ব্যবস্থা নেয়।’

এ বিভাগের আরো খবর