কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির থেকে তৃতীয় ধাপে প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা যাচ্ছে নোয়াখালীর ভাসানচরে। শুক্রবার বিকেলে তাদের ওই দ্বীপে পৌঁছানোর কথা।
ভাসানাচরে যাওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বুধবার বিকেলেই কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গা উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে চলে আসে। বাকিরা বৃহস্পতিবার সকালে আসার কথা রয়েছে। সেখানে থেকে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শেষে বৃহস্পতিবার বাসে করে তারা যাবে চট্টগ্রামে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ শামছু দ্দৌজা নয়ন নিউজবাংলাকে জানান, এবারও রোহিঙ্গাদের প্রথমে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে নেয়া হবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-ঘাটে। শুক্রবার সকালে তাদের নিয়ে নৌ-বাহিনীর জাহাজ ভাচানচরে উদ্দেশে যাত্রা করার কথা রয়েছে।
উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-০৭-এর মাঝি আবদুস সালাম জানান, তাদের শিবির থেকে প্রায় ৩০ পরিবারের প্রায় ১৫০ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে।
বুধবার সন্ধ্যায় কিছু পরিবার ক্যাম্প ছেড়ে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে যায়। আর কিছু রোহিঙ্গা পরিবার বৃহস্পতিবার সকালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া কুতুপালং-২ ক্যাম্পের ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম জানান, কুতুপালং ক্যাম্প দুই থেকে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে।
তিনি আরও জানান, যে সব রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাচ্ছে, তারা সবাই স্বেচ্ছায় উৎসবমুখর পরিবেশে যাচ্ছে।
সমাজ কল্যাণ উন্নত সংস্থা (স্কার্স) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা জানান, তৃতীয় ধাপে রোহিঙ্গাদের দল বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবে। পরদিন শুক্রবার নৌ-বাহিনীর জাহাজে করে ভাচানচরে যাবে।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম জানান, এই রোহিঙ্গারা শুক্রবার বিকেলে ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে থেকে ছিল আরও প্রায় চার লাখ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে ৩৪টি ক্যাম্পে।
রোহিঙ্গাদের জন্য নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে সরকার। গত ডিসেম্বরে শুরু হয় স্থানান্তর প্রক্রিয়া। ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই দফায় সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুকে ভাসানচরে নেয়া হয়।