পাঁচ মাসের গর্ভবতী নারী হাসপাতালে গেছেন চিকিৎসার জন্য। অন্য একজন এসেছেন গর্ভপাত করাবেন বলে। সেই নারীর বদলে যিনি চিকিৎসা করাতে গেছেন, তার গর্ভপাত করানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের একটি হাসপাতালে।
যে নার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এখন পলাতক। আর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ওই নারী।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১০টায় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূর চাচা লুৎফর রহমান।
এতে বলা হয়, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গর্জনা গ্রামের পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জিয়াসমিন আক্তার গত ২৪ জানুয়ারি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ২০ নম্বর শয্যায় ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা চলছিল তার।
কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসক নাসিমার নির্দেশে তাকে শয্যা থেকে অন্য একটি কক্ষে নিয়ে যান স্বাস্থ্য সহকারী ফাতেমা আক্তার। পরে সেখানে ওই গৃহবধূকে জোর করে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করেন তিনি।
এ সময় গৃহবধূর চিৎকারে রোগীর স্বজন ও আশপাশের লোকজন ছুটে যান। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই নারীর মাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে দ্রুত হাসপাতাল থেকে চলে যান ফাতেমা।
এ ঘটনায় গৃহবধূ জিয়াসমিন আক্তার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিষয়টি চিকিৎসক নাসিমাকে জানানো হলে তিনি ফাতেমা বাসায় চলে গেছেন বলে জানান।
ডাক্তার নাসিমা জানান, তিনি ঘটনার সময় রাউন্ডে ছিলেন এবং ডাক্তার রুমা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।
গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রুমা জানান, গাইনি ওয়ার্ডে ২১ নম্বর বেডে এক রোগীকে গর্ভপাত (ডিঅ্যান্ডসি) করানোর কথা ছিল। কিন্তু ২০ ও ২১ বেডে পাশাপাশি হওয়ায় হয়তো ভুলে ওই রোগীকে অন্য কক্ষে নিয়ে যান স্বাস্থ্য সহকারী ফাতেমা আক্তার।
তবে এ ঘটনার পর থেকে স্বাস্থ্য সহকারী ফাতেমা আক্তারকে হাসপাতালে দেখা যায়নি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আরশ্বাদ উল্লা বলেন, ২০ ও ২১ বেড পাশাপাশি হওয়ায় ‘ভুলে’ ২০ বেডের রোগীকে নিয়ে যান ফাতেমা। ক্যাথেটার পড়ানো শুরু হলে রোগী কান্নাকাটি শুরু করেন।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর চাচা লুৎফর রহমান একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।