বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চট্টগ্রামে বিশাল ব্যবধানে জয়ের পথে নৌকা

  •    
  • ২৭ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:২২

যতগুলো কেন্দ্রের ফল আসছে, বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের ব্যবধান বাড়ছে ততই। ৭৩৫টি কেন্দ্রের ৬৬৫ ফলাফলে ধানের শীষের চেয়ে ছয় গুণেরও বেশি ভোট পড়তে দেখা যায় নৌকায়।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে যেসব কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের থেকে বিশাল ব্যবধানে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

রাত দেড়টা পর্যন্ত ৭৩০টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। এতে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের রেজাউল পেয়েছেন ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮১০ ভোট। আর ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৪২ ভোট।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নির্বাচনি সহিংসতায় নিহত এক

আওয়ামী লীগের রেজাউল ও বিএনপির শাহাদাত ছাড়াও মেয়র পদে লড়ছেন আরও পাঁচ প্রার্থী। এ ছাড়া ৩৯টি সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৪টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৩৭ জন।

বুধবার সকাল আটটা থেকে নগরের ৭৩৫টি কেন্দ্রে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) শুরু হয় ভোটগ্রহণ। সহিংসতা, প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং কেন্দ্র ফাঁকা পড়ে থাকার মধ্য দিয়ে ভোট শেষ হয় বিকেল চারটায়।

প্রাথমিকভাবে যে কয়টি কেন্দ্রের ফল এসেছে তাতে ব্যাপক ভোটে এগিয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি: নিউজবাংলা

সহিংসতায় নিহত এক

সকাল আটটায় ভোট শুরুর ঘণ্টা দুই পর নগরের খুলশী থানার আমবাগান ঝাউতলার ইউসেফ এলাকায় নির্বাচনি সহিংসতার সময় গুলিতে আলাউদ্দিন আলম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আলম গুলিবিদ্ধ হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

আমবাগান ঝাউতলার সহিংসতা ছাড়াও ভোটের সকালে লালখান বাজার ও পাহাড়তলি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ও গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল ও বিদ্রোহী প্রার্থী এস কবির মানিকের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় সাত থেকে আট জন আহত হন।

একই সময়ে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের অংশ পাহাড়তলীতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নুরুল আমিন ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমেদের সমর্থকদের হয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। আহত হন অন্তত ১০ জন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটের দিন অধিকাংশ কেন্দ্র ছিল এমন ফাঁকা। ছবি: নিউজবাংলা

কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটার খরা

সকাল আটটায় ভোট শুরুর সময় ছিল কনকনে ঠান্ডা। ধারণা করা হচ্ছিল, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে ভোটার। কিন্তু রোদের দেখা মিললেও, দেখা মেলেনি ভোটারদের।

সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্রে ঘুরে অধিকাংশতেই নগণ্য ভোটার উপস্থিতিই দেখতে পেয়েছে নিউজবাংলার টিম।

কদম মোবারক মুসলিম এতিম খানা বিদ্যালয় কেন্দ্রে মহিলা ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৮০। সকাল ১০টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৭৮টি।

কোথাও কোথাও দেখা গেছে দুপুর পর্যন্ত ভোট গ্রহণের হার ৫-৬ শতাংশের নিচে। দুপুরের পর ভোটার বাড়ার নমুনাও দেখা যায়নি।

শহীদনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, টিসার্চ ট্রেনিং কলেজ, ঝাউতলা বাজার বঙ্গবন্ধু বাংলা বিদ্যাপিট, ফিরোজ শাহ কলোনী সরকারি বিদ্যালয়সহ অনেক কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুব কম।

‘শেষ’ দেখে ছাড়বেন বিএনপির শাহাদাত

এসব অনিয়মের মধ্যেও ভোট মেনে নেবেন কি না, নগরের চকবাজার টিচার্স ট্রেনিং কলেজে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ভোট দিতে এসে সাংবাদিকদের বিএনপি মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন জানান, শেষ দেখতে চান তিনি।

‘আমি একজন রাজনীতিবিদ। ছোটকাল থেকে ছাত্র রাজনীতি করে এই অবস্থায় উঠে এসেছি। নির্বাচন আমি শেষ পর্যন্ত দেখে ছাড়ব। তাদের নগ্নতা আমি সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দেব। তারা কত নগ্ন ও নির্মম হতে পারে।’

বিএনপির মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ করেন কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের মেরে বের করে দেয়া হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসে ভোট নিয়ে অনিয়মের অভিযোগও জানান শাহাদাত। এ সময় কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুলিশের অতি বাড়াবাড়ির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।

শাহাদাত বলেন, ‘এই নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নয়। এটা আমাদের সঙ্গে হয়েছে পুলিশ প্রশাসনের। কমপ্লিটলি মনে হয়েছে পুলিশের অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা কীভাবে নির্বাচনটা দ্রুত করে আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে দেবে এই চিন্তায় যেন তাদের মধ্যে কাজ করেছে।’

ভোট বর্জন

নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দুই প্রার্থী। ভোট চলার সময় সড়ে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়রপ্রার্থী মো. জান্নাতুল ইসলাম।

নগরীর কোতোয়ালী থানার নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে দুপুর তিনটার দিকে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামানের কাছে জমা দেয়া অভিযোগে কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেয়া, মারধর ও প্রার্থীর সঙ্গে অসদাচরণের কথা উল্লেখ করেন জান্নাতুল।

দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ১৩ নম্বর সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের প্রার্থী মনোয়ারা বেগম। তবে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে কোনো অভিযোগ দেননি তিনি।

কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার প্রতিবাদে কয়েকজন কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নগরীর লালখান বাজার মোড়ে এসে অবস্থান নেন মনোরায়া। বলেন, ‘আমি নির্বাচন বর্জন করছি। এই নির্বাচনের কোনো দরকার নাই।’

এ বিভাগের আরো খবর