বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মিশর থেকে উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনার ঘটনায় এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম পেয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে বিমানের কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী।
উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কিছু লোকের কাছে জবাব চেয়েছি। কিছু লোককে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব, তাদেরকে আমরা আগামী সভায় ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কমিটির সদস্য আসলামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের তদন্তে বিমানে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার একটি অনিয়ম দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি আরও কতগুলো অনিয়ম আমরা দেখেছি। এগুলোর বিষয়ে আমাদের কমিটিতে আলোচনা হবে, এরপর চূড়ান্ত একটি বিবৃতি আসবে।’
২০১৪ সালে মিশরের ইজিপ্ট এয়ারের কাছ থেকে ড্রাই লিজ পদ্ধতিতে পাঁচ বছরের জন্য দুটি বোয়িং ট্রিপল সেভেন উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান। এর এক বছরের মধ্যেই প্রথম উড়োজাহাজটির একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজ সচল রাখতে পরপর দুটি ইঞ্জিন ভাড়ায় আনা হলে নষ্ট হয়ে যায় সেগুলোও। পরের উড়োজাহাজটির ক্ষেত্রেও একই সংকটে পড়ে বিমান।
ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে উড়োজাহাজ দুটি অচল হয়ে বসে থাকলেও এর জন্য বছরে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে বিমানকে। পাঁচ বছরে এই দুটি উড়োজাহাজের কারণে বিমানকে লোকশান গুনতে হয়েছে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
সংসদীয় কমিটির সদস্য আসলামুল হক বলেন, ‘কিছুদিন চলার পরেই উড়োজাহাজটি অকেজো হয়ে যায়, এখান থেকেই অনিয়মটা শুরু হয়। শুরু থেকেই চুক্তিতে যা ছিল সেটাকে পাস কাটিয়ে ১৮ বছরের পুরাতন দুটি উড়োজাহাজ আনা হয়েছে।’
আসলামুল হক জানান, এ অনিয়মের সঙ্গে বিমানের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার জোগসাজসের প্রমাণ পেয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
তিনি বলেন, ‘অনেকের নাম এসেছে। বিশেষ করে ক্যাপ্টেন এরশাদ, তার নেতৃত্বেই পরিদর্শন দলটি মিশরে গিয়েছিল। সেই দলের যারা ছিলেন সবার নামই আমরা উপস্থাপন করেছি। তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হবে।’
এর আগেও দশম সংসদে এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি প্রথম এই উড়োজাহাজ দুটির বিষয়ে তদন্ত শুরু করে। সে সময় দেয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যাচাই না করেই উড়োজাহাজ দুটি ভাড়ায় আনা হয়েছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিষয়টি নিয়ে আবারও তদন্ত শুরু করে একাদশ সংসদের সংসদীয় কমিটি।