চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী বেঁচে না থাকলেও তার সঙ্গে আ জ ম নাছিরের যে দ্বন্দ্ব, সেটা কদিন আগেও ছিল প্রকাশ্য।
এবার চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে সদ্য সাবেক মেয়র নাছির মনোনয়ন চাইলেও, দলের সর্বোচ্চ ফোরাম তার ওপর আর আস্থা রাখেনি। মনোনয়ন দেয়া হয়, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরীকে। রাজনীতির এই নির্বিবাদী মানুষটি মহিউদ্দিনের অনুসারী হিসেবেই পরিচিত।
তাই এই দ্বন্দ্ব আরও দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। বলা হয়, মহিউদ্দিনের প্রয়াণের পর তার অনুসারীদের নেতৃত্বে ছিলেন তারই ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ফলে সরকারের দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পর মর্যাদা রক্ষার এই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগে কী হয়, তা নিয়ে দৃষ্টি ছিল।
তবে হিসাব নিকাশ সব পাল্টে দিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পদধারী কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও দলে পদ না থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ নেতারা চট্টগ্রামে সিটিতে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
তার সুফলও পেয়েছেন তারা। দীর্ঘদিনের রাগ অভিমানের বরফ গলিয়ে এখন সবাই এককাট্টা।
রেজাউলের পক্ষে প্রচারে ছিলেন সিনে জগতের তারকারা
দ্বন্দ্বের অবসানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কাজ করেছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ।
আওয়ামী লীগ মনে করে, দল ঐক্যবদ্ধ থাকলে এখানে তাদের জয় নিশ্চিত।
ইতিহাসও আওয়ামী লীগের পক্ষে। গত তিন দশকে মেয়র পদে একবারই হেরেছে বর্তমানের ক্ষমতাসীনরা। ২০১০ সাল মহিউদ্দিন চৌধুরী হেরে যান বিএনপি সমর্থিত এম মনজুর আলমের কাছে।
মনজুরও ছিলেন আওয়ামী লীগ ঘরানার লোক। তিনি গত নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে ভোটে হেরে যান। পরে আবার আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন।
আওয়ামী লীগ ভোটের প্রচারে গত এক যুগে চট্টগ্রামে দৃশ্যমান নানা উন্নয়নের কথা তুলে ভোট চেয়েছে। এই উন্নয়নে দলের ভোট বেড়েছে বলে মনে করেন নেতারা।