বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করুণার সুযোগ নিয়ে ছিনতাই, জাসদ নেতাকে হত্যা

  •    
  • ২৬ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:১৫

‘শাকিলের হাত কাটা। মানবিক কারণে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে পুলিশ তাকে বাধা দেয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় নির্বিঘ্নে রিকশা চালান তিনি। গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান শাকিল, যিনি ডুম্বাস নামেও পরিচিত। এক হাতের কবজি পর্যন্ত কাটা। সহানুভূতির দৃষ্টিতেই দেখে যাত্রীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। যে কারণে অবৈধ হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বা আশপাশে তার রিকশাকে বাধা দেয়নি কেউ।

পুলিশ বলছে, মানুষের এই আবেগের সুযোগ নিয়ে শাকিল যুক্ত হন এক ছিনতাইকারী চক্রে। আর এই চক্রের শিকার হয়েই সম্প্রতি হাইকোর্টের সামনে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ নেতা হামিদুল ইসলাম।

নিহত জাসদ নেতা হামিদুল ইসলাম

শনিবার রাতে হাইকোর্টের ঈদগাহ মাঠের সামনে ফুটপাতে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হন হামিদুল। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মারা যান তিনি। এ সময় তার পকেটে পাওয়া যায় ১৬ হাজার টাকা।

ওই ঘটনায় সোমবার পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগ, যাদের একজন এই শাকিল।

রাজধানীর উত্তর মুগদা ও কামরাঙ্গীচর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

শাকিল ছাড়া অন্যরা হলেন মো. সোহেল ওরফে অ্যারাবিয়ান হোসেন, জাহিদ হোসেন, শুকুর আলী ও সোহেল মিয়া।

তাদের কাছ থেকে হামিদুল হত্যায় ব্যবহার করা চাকু, শাকিলের ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

হামিদুল গত ২৫ বছর ধরে সেগুনবাগিচার হাইকোর্ট এলাকায় ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা করতেন। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ওই এলাকাতেই থাকতেন।

সেই রাতে পুরান ঢাকায় তার ফ্ল্যাটের ভাড়ার টাকা নিয়ে সেগুনবাগিচার বাসায় ফিরছিলেন। পথে ছিনতাইকারীর হামলার শিকার হন।

এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা হয়। অনুসন্ধানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) প্রধান একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘শাকিলের হাত কাটা। মানবিক কারণে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে পুলিশ তাকে বাধা দেয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় নির্বিঘ্নে রিকশা চালান তিনি। গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, তিনি পেশাদার ছিনতাইকারী।’

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানায়, ছিনতাইকারীরা শাকিলের রিকশায় রাতে হাইকোর্টের মাজার গেটের বিপরীত পাশে আসেন।

রিকশা নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। বাকি চার জন আনুমানিক রাত সাড়ে আটটার দিকে হামিদুলের গতিরোধ করেন।

তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও পকেট থেকে মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়া হয়।

পকেটে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে চিৎকার করেন হামিদুল। তখন সোহেল তার কাছে থাকা চাকু দিয়ে হামিদুলকে আঘাত করেন। পরে সবাই শাকিলের রিকশায় করেই পালিয়ে যান।

ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত রিকশা

প্রায় দেড় ঘণ্টা পর হামিদুলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান ভ্যানচালক আবদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমি রাস্তা দিয়া যাইতাছিলাম। হাইকোর্টের দিকে লোকজন একজনকে আমার ভ্যানে তুইল্যা দেয়। তার শরীর রক্তে ভাইস্যা যাইতাছিল। হাসপাতালে নেওয়ার পরেও পা দিয়া রক্ত পড়তে দেখছি। কোন জায়গায় মারছে জানি না।’

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, গ্রেপ্তার সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি করে ছিনতাই-ডাকাতির মামলা রয়েছে। প্রতিবারই জামিনে বেরিয়ে এসে একই অপরাধে জড়িয়েছেন তারা।’

এ বিভাগের আরো খবর