রাত পোহালেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। শেষ মুহূর্তে চলছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) ভোটের উপকরণ পাঠানোর কাজ।
নগরীর চারটি স্থান থেকে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এসব উপকরণ ৭৩৫টি কেন্দ্রে পাঠানো শুরু হয়। এসব কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা চার হাজার ৮৮৬টি।
বিতরণ কেন্দ্র থেকে নির্বাচনি কর্মকর্তাদের কাছে ভোটের উপকরণ বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে তা পুলিশি প্রহরায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নির্ধারিত কেন্দ্রে।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে উপকরণ বিতরণ ঘুরে দেখেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহম্মদ হাসানুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই মালামাল তিন-চার ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। সেখানে যাওয়া মালামালগুলো আমরা আবার রিচেক (পুনরায় পরীক্ষা নিরীক্ষা) করব।
‘আজকের মধ্যে আমরা সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করব, যাতে আগামীকাল সকাল ৮টার মধ্যে ভোট গ্রহণ শুরু করতে কোনো ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়।’
চট্টগ্রামে ভোটের উপকরণ বিতরণ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহম্মদ হাসানুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা
এবারই প্রথম ইভিএমে ভোট হবে চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশনে। সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা না হলেও রিটার্নিং কর্মকর্তার আশা, ভোটার উপস্থিতি হবে সন্তোষজনক। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক পৌরসভা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকার উদাহরণ সামনে আনেন।
ইভিএমের কারিগরি ত্রুটির বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সতর্ক বলেও জানান হাসানুজ্জামান। তিনি বলেন, আমাদের বাড়তি ইভিএম আছে। যদি কোনো সমস্যা হয়, আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা রিপ্লেস করতে পারব।’
প্রতি কেন্দ্রের জন্য একটি করে বাড়তি ইভিএম পাঠানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বুধবার উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের আশা জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘সর্বোপরি আমরা নগরবাসীকে এবং ভোটারদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই। আগামীকাল তারা একেবারেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবেন এবং ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। নিরাপদে তারা বাসায় ফিরে আসতে পারবেন, আমরা সেই ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করেছি।’
শেষ দিন পর্যন্ত সব প্রার্থী তাদের প্রচার উৎসবমুখরভাবে শেষ করেছে বলেও এ সময় দাবি করেন হাসানুজ্জামান।
এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠ ছাড়া ভোটের সরঞ্জাম বিতরণের অন্য তিন স্থান হচ্ছে আগ্রাবাদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নাসিরাবাদ বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও বন্দর স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগর চট্টগ্রামে এ বছর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তবে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির শাহাদাত হোসেন। বাকি পাঁচ প্রার্থী নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই ভোটের মাঠে।
এ ছাড়া ৪১ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন ১৭২ জন। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই আছেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তাই কাউন্সিল পদে জমজমাট লড়াইয়ের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
আর সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে প্রার্থীর সংখ্যা ৫৭। ভোটের প্রচারে পিছিয়ে ছিলেন না এই নারী প্রার্থীরাও।