কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে দায়িত্বরত সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন হাসানের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম তানভীর আরাফাত।
তলবের পরিপ্রেক্ষিতে হাজির হয়ে সোমবার হাইকোর্টে জমা দেয়া আবেদনে এসপি জানান, তিনি ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি। তাই এমন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি দায়িত্ব পালনে আরও সতর্ক হবেন।
এ ধরনের ভুল আর কখনও হবে না বলেও আবেদনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
আবেদনে তানভীর আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগের জন্য আমার মনে সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। কোনো অবস্থাতেই বিন্দুমাত্র অসম্মান দেখানোর কথা দূরে থাক, বরং বিচার বিভাগের দেয়া কাজে নিয়োজিত হতে পারলে নিজেকে সম্মানিত বোধ করি।
‘এ ঘটনায় আমি মনের গভীর থেকে অনুতপ্ত। আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
গত ২০ জানুয়ারি এসপি তানভীরকে স্বপ্রণোদিত হয়ে তলব করেছিল বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ। সোমবার ওই বেঞ্চেই হাজির হন তিনি।
নির্বাচনি দায়িত্ব পালনের সময় এসপি তানভীরের দুর্ব্যবহারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেন কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহসিন। ওই অভিযোগের একটি অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টেও দেয়া হয়।
এ নিয়ে সংবাদও প্রকাশ হয়। ওই সংবাদের বিষয়টি আমলে নিয়ে আদালত এসপিকে তলব করে।
বিচারকের অভিযোগে বলা হয়, ভেড়ামারা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এক ভোটারের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করেন মহসিন। সেখানে পরিচয়পত্র ছাড়াই কয়েক জনকে ভেতরে দেখতে পেয়ে প্রিসাইডিং অফিসারকে বাইরে ডেকে নেন তিনি।
তিনি কথা বলা শুরু করতেই এসপি তানভীর ৪০ থেকে ৫০ জন ফোর্সসহ ওই ভোটকেন্দ্রে যান। সেখানে গিয়েই উচ্চস্বরে প্রিসাইডিং অফিসারকে তলব করেন এসপি।এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েক জন তার সামনে থেকে প্রিসাইডিং অফিসারকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপাচাপি করেন। তখন তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে কথা শেষে প্রিসাইডিং অফিসারকে নিয়ে যেতে বলেন।
এসপি তানভীর মহসিন এ সময় এগিয়ে এসে তার কাছে পরিচয় জানতে চান। পরিচয় দেয়ার পরও এসপি তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং তাকে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এসপি ও তার সঙ্গী ফোর্সদের এমন আচরণ স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিধিমালা-২০১০-এর ৬৯, ৭০, ৭৪, ৮০ ও ৮১ বিধির সরাসরি লঙ্ঘন বলে ওই আবেদনে বলা হয়।