লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পেটানোর পর পুড়িয়ে হত্যার মামলায় চার আসামির জামিন আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
রোববার বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
চার আসামি হলেন আশরাফুল ইসলাম, বাইজিদ বোস্তামি, আবদুর রহিম ও হেলাল উদ্দিন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন গাজী মামুনুর রশিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারোয়ার হোসেন বাপ্পী।
পরে আইনজীবী গাজী মামুনুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জামিন চেয়ে গত ১২ ডিসেম্বর আবেদন করেছিলাম। আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে খারিজ করে দিয়েছে।’
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার গুজব ছড়িয়ে গত বছরের ২৯ অক্টোবর শহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
শহীদুন্নবী বুড়িমারীর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়েছিলেন নামাজ পড়তে। সেখানে তাক থেকে কোরআন শরিফ নামানোর সময় দুর্ঘটনাবশত পড়ে যায়। আর এতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, তিনি কোরআন অবমাননা করেছেন।
স্থানীয় প্রশাসন গিয়ে শহীদুন্নবীকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। এরপর উন্মত্ত জনতা হামলা করে সেখানে। পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
এই ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে । ন্যাক্কারজনক এই হত্যার ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থা নেয় তাৎক্ষণিক।
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে পুলিশ গ্রেপ্তার করে ৪৫ জনকে। ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ছয় জন।
পরদিন পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির ক্রাইম সিন সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা গুজবের উৎস, অর্থাৎ প্রথমে কে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছে সেটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন।
সেই সঙ্গে ঘটনার কোন পর্যায়ে কারা এবং কীভাবে সম্পৃক্ত হয়েছেন সেটি খতিয়ে দেখা হয়।
শহীদুন্নবীর ভাই সাইফুল আলম এই ঘটনায় ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ও শত শত অজ্ঞাতপরিচয়কে আসামি করে মামলা করেন।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পাটগ্রাম পুলিশের এসআই শাহজাহান আরও একটি মামলা করেন ৪৯ জনের বিরুদ্ধে।
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মো. শাহ নেওয়াজ নিশাত। এ মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত পরিচয় শত শত ব্যক্তিকে।