শাহিনা আক্তার। কুমিল্লা সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মানুষ। মাটি কাটার শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। স্বামী অটোরিকশা চালক।
নিজের ঘর নাই। তিন মেয়ে নিয়ে কখনও ভাইয়ের বাড়িতে, কখনও পাড়াপড়শির বাড়িতে মাথা গুঁজতেন।
তবে এখন সে দুঃচিন্তা থেকে মুক্তি পেলেন। হাতে পেলেন একান্তই নিজের ঘরের চাবি। তাও পাকা দালান।
এখন মেয়েদের লেখাপড়া ও বিয়ে নিয়ে আর কোন চিন্তা নেই শাহিনার। ঘরের চাবি হাতে পেয়ে কেঁদে ফেললেন।
দুই হাত উপরে তুলে তিনি বলেন, ‘আল্লায় শেখ হাসিনা আফারে বাঁচাইয়া রাখুক। তার লাইগ্যা এহন আর রইদে পুড়তে হইব না, মেঘে বিজতে হইব না।’
দিনমজুর ফজর আলী। তিন ছেলে এক মেয়ে। ছেলেরা কাজ করে। মেয়েটি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। কুমিল্লা সদর উপজেলার জামবাড়ী এলাকার একজনের বাড়িতে থাকেন।
নিজের ভিটেমাটি ছিল না। এখন ঘরের মালিক। চাবি হাতে পেয়ে বললেন, ‘বাপজান, এইডা তো ঘরের চাবি না। মনে হয় ঈদের চানডা হাতে পাইছি। এহন আর পরের বাড়িত থাহন লাগত না। আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী আফারে বালা রাখব।’
গৃহহীনদের কাছে জমিসহ পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়।
শনিবার কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদে উপকারভোগীদের হাতে ঘরের সার্টিফিকেট, কবুলিয়ত দলিল ও নামজারি তুলে দেন সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার।
উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন।
সদর দক্ষিণ উপজেলায় ১৮ জনের হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর।
সেখানে পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ন-২ প্রকল্প হতে প্রথম পর্যায়ে ৫৯৫টি সেমি-পাকা ঘর নির্মাণে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৩৫৯টি গৃহের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২৩৬টি গৃহের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সব মিলিয়ে জেলায় ঘর দেয়া হবে তিন হাজার ১৭২টি পরিবারকে। পর্যায়ক্রমে সবার কাছে নতুন ঘর হস্তান্তর করা হবে।