বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দুই বারের এমপি গৃহহীন, পেলেন উপহারের ঘর

  •    
  • ২৩ জানুয়ারি, ২০২১ ২০:২৬

‘১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহের গফরগাঁও আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এনামুল হক জজ মিয়া। সে সময় গফরগাঁও, ঢাকায় তার বহুতল ভবন ও নানা সম্পদ ছিল। দুই স্ত্রী ও তাদের সন্তানদের লিখে দেয়ার পর বাকি জমি তিনি দিয়েছেন মসজিদে। তৃতীয় স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে তিনি একটি কক্ষ ভাড়া করে মেঝেতে ঘুমাতেন।’

মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে যে ৬৬ হাজার মানুষ ঘর পেয়েছেন তাদের মধ্যে ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের এনামুল হক জজ মিয়ার নাম না বললেই নয়। দুই বার সংসদ সদস্য ছিলেন এখন ছিন্নমূল এই মানুষটি।

এই দশার কারণ তার উদার মন। নিজের সহায় সম্পদ সব সন্তান ও মসজিদের জন্য লিখে দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তিনি। আর এখন সরকার হয়েছে তার সহায়।

শনিবার গফরগাঁও উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে জজ মিয়াকে জমির দলিলসহ ঘর হস্তান্তর করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গফরগাঁও পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ইকবাল হোসেন সুমন। তিনি জানান, এমপি বাবেল গোলন্দাজ নিজ তাকে ঘর বুঝিয়ে দেন জজ মিয়ার হাতে।

জজ মিয়া ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে ময়মনসিংহ-১০ গফরগাঁও আসন থেকে জাতীয় পার্টির হয়ে সংসদ সদস্য হন।

তিনি বিয়ে করেছেন তিনটি। প্রথম স্ত্রী নাজু এক মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। দ্বিতীয় স্ত্রী নাছিমা হক ঢাকার পুরানা পল্টন ও মিরপুর কাজী পাড়ায় দুই সন্তান নিয়ে দুটি বাড়িতে থাকেন।

গফরগাঁও পৌর শহর ও ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়ি ছিল জজের। সহায় সম্পদ যা ছিল সবই এই স্ত্রী ও সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছিলেন এনামুল হক।

পরে আরও একটি বিয়ে করেন জজ। এই সংসারে আছে আট বছরের সন্তান নুরে এলাহী।

আগের দুই সংসারের সন্তানরা প্রাচুর্য দেখলেও নুরে এলাহী দেখছে দারিদ্র্য।

সর্বশেষ গফরগাঁওয় পৌর শহরে ১২ শতাংশ জমি মসজিদের নামে লিখে দিয়ে গৃহহীন হয়ে যান।

তখন থেকে এক কক্ষের ভাড়া বাসায় থাকছেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। খাট কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেঝেতেই ঘুমাতেন।

এই খবরটি নানাভাবে জানতে পারেন এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল। আর তিনিই স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করেন জজ মিয়ার জন্য কিছু একটা করতে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সংসদ সদস্য মহোদয় বিভিন্ন সাংবাদ মাধ্যমে জানতে পারেন সাবেক জাতীয় পার্টির এমপি এনামুল হক জজ মিয়া মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি এক রুমের ভাড়া বাসায় থাকছেন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে। খাট কেনার সামর্থ্য না থাকায় মেঝেতেই ঘুমান।

‘পরে পৌরসভা মেয়র ও আমাকে বিষয়টি জানান, আমরা তার খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারি কথা সত্য। পরে তাকে একটি ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।’

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, ময়মনসিংহে চার হাজার ৭০৮ জন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের তালিকা করা হয়। এর মধ্যে প্রথম ধাপে এক হাজার ৩০৫টি ঘরের অনুমোদন দেয়া হয়।

সদর উপজেলায় ২৫০টি, গফরগাঁওয়ে ২০০টি, ভালুকায় ১৯৯টি, গৌরীপুরে ১০২টি, হালুয়াঘাটে ১০০টি, ফুলপুরে ৯৭টি, নান্দাইলে ৬২টি, ঈশ্বরগঞ্জ, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, ফুলবাড়িয়া, তারাকান্দায় ৫০টি করে এবং ধোবাউড়ায় ৪৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

তালিকায় থাকা বাকিদেরও পর্যায়ক্রমে প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর