বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘হেভি খুশি’ মতিয়র

  •    
  • ২৩ জানুয়ারি, ২০২১ ১৯:২৩

কত লাঞ্ছনা। অহন এইতার শেষ অইছে। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছেন। জাগা দিছেন। থাহনের একটা বাউ অইছে। শেখ হাসিনা অনেক দিন বাইচ্যা থাহুক।’

‘আমরা হেভি খুশি। বুঝায়া কইতাম পারতাম না। কি যে ভালা লাগতাছে! অতদিন নানেবানে (এখানে সেখানে) ঘুইরা থাকছি। বাড়িঘর আছিল না। কিছুদিন ধইরা গ্যারামেই লতিফ নামের একজনের বাড়িতে ১২০০ ট্যাহা ভাড়া দিয়া তাকতাম।

‘বাড়া ঠিক মতন দিতা পারছি না। কত লাঞ্ছনা। অহন এইতার শেষ অইছে। প্রধানমন্ত্রী ঘর দিছেন। জাগা দিছেন। থাহনের একটা বাউ অইছে। শেখ হাসিনা অনেক দিন বাইচ্যা থাহুক।’

শনিবার যে ৬৬ হাজার গৃহহীন মানুষের হাতে ঘরের মালিকানা তুলে দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার দলপা ইউনিয়নের বৈখেরহাটি গ্রামের মতিয়র রহমান একজন।

তার চোখেমুখে খুশির যেন বন্যা। ঘর ও জমি পাওয়ার পর নিউজবাংলাকে এভাবে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

স্ত্রী মমিনা আক্তারকে নিয়ে গ্রামের বাজারে একটি ছোট চায়ের দোকান চালান মতিয়র। তিন ছেলে এক মেয়ে নিয়ে পাঁচ জনের সংসারের খাওয়ার সংস্থান করতেই হিমশিম খেতে হয়। নিজের জমি, বাড়ি কিছুই নাই। এ অবস্থায় জমি বাড়ি পেয়ে অনেকটা নিশ্চিন্তে বাকি জীবনটা কাটাতে পারবেন।

একই উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের দনাচাপুর গ্রামের দিনমজুর দম্পতি টিটু দত্ত ও ললিতা সরকার। এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন গ্রামের কালি মন্দিরের জায়গায়। তিনিও জমি-ঘর পেয়েছেন।

সকালে দলিল হাতে পেয়ে টিটু দত্ত বলেন, ‘রোজ কামকাজ কইরা যে ট্যাহা পাই এইতা দিয়া খাওয়নেরই অয় না। তাহি যেইডা এইডারে থায়ন কয় না। মন্দিরের জাগাত কোনোমতে থাকতাম।

‘প্রধানমন্ত্রী আমরার গরিবের কথা ভাবছে। জমি-বাড়ি দিছে। আমরা খুউব কুশি। শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ। অনেকদিন বাচুক। প্রধানমন্ত্রী আমরার গরিবের মানুষ। আমরার কষ্ট বুঝে।’

টিটু ঘরে উঠবেন আর দুই-তিন দিন পর। তিনি বলেন, ‘অহনো গরের কাম শেস অয় নাই। একটু বাহি আছে। দুই তিন দিনের মধ্যে শেষ অইব। পরে নিজের বাড়িতে উঠবাম।’

দলপা ইউনিয়নের দিনমজুর কামরুজ্জামান বলেন, ‘দলিল হাতে পাইছি। আমরা খুইব খুশি লাগতাছে। দুই তিন দিনের মধ্যে ঘরে উঠতে পারব।’

জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার খালিয়াজুরী ইউনিয়নের মুজবনগর গ্রামে ৭৩ জনকে ঘর ও জমি দেয়া হয়েছে।

এক যুগ আগে এখানে সরকারি জমিতে কয়েকজন বসতি করেন। তারাই নাম রাখেন মুজিব নগর। এই মুজিবনগরে প্রশাসন প্রধানমন্ত্রীর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কর্মসূচিতে ঘর নির্মাণ করে দেয়।

৬৫ বছরের ময়না মিয়া বলেন, ‘মনে হচ্ছিল স্বপ্ন দেখছি। প্রধানমন্ত্রীকে আমরার মেলা দোয়া রইল। হেইন (তিনি) ভালা থাহুন।

নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান জানান, জেলার ১০ উপজেলায় এক হাজার ৩০টি পরিবারের মাঝে জমি ও ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঘরে সুপেয় পানি, টয়লেট, বিদ্যুতের সুবিধা দেয়া হয়েছে।

এসব পরিবারের প্রতি প্রশাসন খেয়াল রাখবে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় তাদের জীবনমান উন্নয়নে তাদেরকে যুক্ত করা হবে।’

যারা ঘর পেয়েছেন তাদের মধ্যে আছে কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক, রিক্সাচালক, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক, গৃহকর্মী, মৎস্যজীবী, মুচিসহ নানা পেশার মানুষ।

সদর উপজেলায় ৪৩, কেন্দুয়ায় ৫০, দুর্গাপুরে ৩৫, পূর্বধলায় ৫৩, কলমাকান্দায় ১০১, মোহনগঞ্জে ৩৬, আটপাড়ায় ৯৮, মদনে ১২৬, বারহাট্রায় ৪৫ ও খালিয়াজুরী উপজেলায় ৪৪৩টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার দেয়া হয়।

এ বিভাগের আরো খবর