দিনমজুর স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় পাঁচ গ্রামের বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম। ছেলেদের একজন রিকশা চালায় এলাকায়, আরেকজন দিনমজুর। বসত-ভিটা না থাকায় যখন যেখানে ঠাঁই পেয়েছেন, থেকেছেন।
তার এই ভ্রাম্যমাণ জীবনের অবসান হলো। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না- এই প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছেন তিনি। আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন, ‘চিয়ারমিন শেখের বেটির কাছত থ্যাকে মোক এই বাড়ি লিয়ে দিচে, মুই একন বড়লোক হঁচু, তোরাই যান, মোক আর হ্যালা করিস না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৬ হাজার ১৮৯টি গৃহহীন পরিবার ঘর পেয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে গৃহহীন পরিবারের কাছে এসব ঘর হস্তান্তর করেন তিনি।
এই প্রকল্পে জয়পুরহাটের পাঁচ উপজেলায় দুই কক্ষের একটি করে ঘর ও দুই শতাংশ জমি পেয়েছে ১৬০টি পরিবার।
প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরের সামনে জয়পুরহাটের ফিরোজা বেগম। ছবি: নিউজবাংলা
ঘর পেয়ে আনন্দে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি পটুয়াখালী সদর উপজেলার পশুরিবুনিয়া গ্রামের পিয়ারা বেগম।
প্রতিবন্ধী স্বামীকে নিয়ে এতদিন মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন তিনি। কখনও অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে, কখনও ইট-পাথর বয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি। থাকছিলেন অস্থায়ী ছাউনীতে। এখন বাড়ি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য মন থেকে দোয়া করেছেন পিয়ারা ও তার স্বামী বসার মিয়া।
পটুয়াখালীতে এমন গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দ ছিল দুই হাজার ১৩১টি বাড়ি। এর মধ্যে শনিবার ৭২৯টি পরিবারের কাছে বাড়ি ও দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঘর ও জমি পেয়ে প্রধামন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বরিশালের সদর উপজেলার ১৫৭টি গৃহহীন পরিবার। জেলার অন্য ১০ উপজেলায় ঘর বুঝে পান এক হাজার নয়টি পরিবার। বরিশালের জন্য বরাদ্দ ছিল মোট এক হাজার ৫৫৬টি ঘর ও জমির দলিল। পর্যায়ক্রমে অন্যগুলোও হস্তান্তর করা হবে জানান সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ও বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
লক্ষ্মীপুর, লালমনিরহাট, মাগুরা, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, চুয়াডাঙ্গা ও বগুড়া প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, সেখানেও বাড়ি ও জমি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন গৃহহীনরা।