মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ৬৬ হাজার ১৮৯টি ঘরের মালিকানা দেয়া হচ্ছে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের হাতে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে গৃহহীনদের হাতে এসব ঘর তুলে দেবেন। সেই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত থাকবেন ৪৯২টি উপজেলার নিরন্ন মানুষ- যাদের হাতে দেয়া হচ্ছে মুজিববর্ষের এই উপহার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দ করা নকশায় নির্মাণ করা হয়েছে প্রতিটি ঘর। প্রতিটি ঘরে থাকছে দুটি শয়ন কক্ষ, একটি লম্বা বারান্দা, একটি রান্নাঘর ও একটি টয়লেট। এসব ঘরের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে বিদ্যুৎ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
তারা শুধু ঘর নয়, সঙ্গে পাচ্ছেন ভূমির মালিকানাও। প্রত্যেককে তার জমি ও ঘরের দলিল নিবন্ধন ও নামজারিও করে দেয়া হচ্ছে। যদি জমি ও ঘরের মূল্য হিসাব করা হয়, তাহলে একেক পরিবার প্রায় ১০ লাখ টাকার সম্পদ পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
দেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে এর আগে এত মানুষকে এক দিনে সরকারি ঘর হস্তান্তর করা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বে এর আগে এক দিনে এত বেশি ঘর বিনামূল্যে হস্তান্তর করা হয়নি।
নওগাঁয় হস্তান্তরের অপেক্ষায় থাকা গৃহহীনদের জন্য ঘর
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস বলেন, ‘এটি একটি অসাধারণ ঘটনা। একই সঙ্গে এতগুলো পরিবারের পুনর্বাসনের নজির পৃথিবীতে আর নেই।’
কায়কাউস জানান, ছয় মাসেরও কম সময়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে আরও প্রায় এক লাখ পরিবারকে ঘর উপহার দেয়া হবে।
- আরও পড়ুন: মুজিববর্ষে ঘর পাচ্ছে দেশের সব গৃহহীন
নানা যাচাই-বাছাইয়ের পর দেখা গেছে, সারা দেশে এখন পর্যন্ত গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার আছে আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি।
পুনর্বাসনের কাজ যেভাবে চলছে, তাতে আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রতিটি পরিবার ঘর পাবে বলেও জানিয়েছেন কায়কাউস।
সরকারের তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে এই ঘরগুলো দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৪১৯ কোটি ৬০ লাখ টাকায় তৈরি করা হয়েছে ২৪ হাজার ৫৩৮টি ঘর।
এ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনশীল ঘর নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৬৫৯ কোটি ৮২ লাখ টাকায় ৩৮ হাজার ৫৮৬টি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের আওতায় ৫২ কোটি ৪১ লাখ টাকায় ৩ হাজার ৬৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ৩ হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হবে শনিবার।