পরীক্ষা নেওয়া ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের বাধা দূর করতে উত্থাপিত তিনটি বিল যাচাই-বাচাই শেষে সংসদে উপস্থাপন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। বিলগুলোতে কমিটি কোনো পরিবর্তনের সুপারিশ করেনি।
সংসদের চলতি অধিবেশনের পরবর্তী বৈঠকে রোববার এগুলো পাসের জন্য কণ্ঠভোটে তোলা হবে।
বৃহস্পতিবার কমিটির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বিল তিনটির ওপর যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপন করে তা পাসের সুপারিশ করেন।
বিদ্যমান আইনে পরীক্ষার পরই ফল প্রকাশের বিধান রয়েছে। তবে সংশোধিত বিলে পরীক্ষা ছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে ফলাফল প্রকাশের সুযোগ রাখা হয়েছে।
কমিটির সুপারিশে বলা হয়, দেশের বিদ্যমান ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল। কিন্তু করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।
মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষার মতো এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না।
শিক্ষামন্ত্রী সেদিন বলেন, অষ্টম শ্রেণির সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফল গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল নির্ধারণ করা হবে। অষ্টম শ্রেণির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হবে। কিন্তু আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় গতবছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আর ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি।
সুপারিশে আরো বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ আইন সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে নতুন বছরের শুরুতেই ফল প্রকাশের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সংসদ অধিবেশন বসার সময় হয়ে যাওয়ায় অধ্যাদেশের ঝামেলায় না গিয়ে একেবারে সংসদে বিল পাস করার পক্ষে মত দেয় মন্ত্রিসভা। গত ১১ জানুয়ারি ওই আইন তিনটি সংশোধনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।
গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জাতীয় সংসদে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী সংসদকে জানান, শিক্ষার্থীদের ফলাফল ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। বিল পাস হলেই তা দ্রুত প্রকাশ করা যাবে।