ভারতের পক্ষ থেকে করোনার ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দেয়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্কের গভীরতা নির্ণয় করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী পররাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে করোনা ভ্যাকসিন হস্তান্তর করার পর তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটা দুই দেশের সম্পর্ক ও সহযোগিতার বড় উদাহরণ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিবেশী নীতিরই প্রকাশ বাংলাদেশের জনগণের জন্য পাঠানো দুই মিলিয়ন ডোজ টিকা উপহার। ভারত বাংলাদেশকে করোনার টিকা দিয়ে প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ তাদের পরম বন্ধু।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারত ১৯৭১ সালে যেমন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল, টিকা দিয়ে এই মহামারিতেও তেমনি দাঁড়িয়ে বন্ধুত্বের প্রমাণ রেখেছে।
‘দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে সাম্প্রতিক ভার্চুয়াল সামিটেই তারা ঘোষণা দিয়েছিলেন এই দুর্যোগ একসঙ্গে মোকাবিলা করবেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি সবার আগে বাংলাদেশকে টিকা পাঠিয়ে সেই কথা রাখলেন।’
আরও টিকা কেনার বিষয়ে ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
টিকা পাওয়ার দিনটি ঐতিহাসিক জানিয়ে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এই মাসে আরও ৫০ লাখ টিকা আসবে। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ছয় মাস, প্রতি মাসে ভারত আমাদের ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেবে।’
তবে কবে থেকে টিকা দেয়া শুরু হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কেউ কোনো ডেট বলে থাকে তাহলে তা নিছকই গুজব। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি ডেট চেয়েছি। তিনি সময় দিলেই আমরা কর্মসূচি চূড়ান্ত করব।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা এখন আমাদের জন্য কোনো সমস্যা না। টিকা দেয়ার অভিজ্ঞতাও আমাদের আছে। আমরা এরই মধ্যে ৪২ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষিত করেছি।’
ভারত থেকে টিকা বহনকারী বিশেষ বিমানটি বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
টিকার প্রথম চালানের ২০ লাখ ডোজ নিয়ে যাওয়া হয় তেজগাঁওয়ের ইপিআই সেন্টারে। সেখানেই বিশেষ ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হবে টিকাগুলো।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ ৩০ মিলিয়ন ডোজ টিকার চুক্তি করেছে। তবে তার আগে এই দুই মিলিয়ন ডোজ উপহার হিসেবে দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যখন পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশেই টিকা নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য নেই, সেখানে আমরা টিকা পেয়ে গেছি এবং তা শিগগিরই দেয়া শুরু হবে।’