পোশাক কর্মীদের স্টাফ বাস ব্যবহার করে যাত্রী তুলে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই।
এ সংক্রান্ত একটি মামলার তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাচা মরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সুমন মিয়া, শরীফ মোল্লা, মুহিত শেখ, আলমগীর হোসেন, রাজীব হোসেন।
মাইদুল ইসলাম নামে একজন মামলাটি করেন। এতে বলা হয়, গত ২৪ জুলাই রাত অনুমান দুইটায় গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট যেতে সাভারের হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি ‘অফিস স্টাফ’ লেখা বাসে উঠেন।
বাসে উঠার সঙ্গে সঙ্গে চালকসহ সাত থেকে আট জন লোক মাইদুলের হাত, পা, চোখ বেঁধে বাসে শুইয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট, কাপড়, নগদ টাকা ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এরপর মাইদুলকে হাত, পা বেঁধে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় সাভার তুরাগ নদীর পার সংলগ্ন রিকু ফিলিং স্টেশন এর বিপরীত পাশে ফেলে চলে যায়।
মাইদুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা সাত থেকে জনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের ভার পায় পিবিআই। পরে সংস্থাটির ঢাকা জেলার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সালেহ ইমরানকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এসআই সালেহ ইমরান জানান, গত কোরবানির ঈদের কিছুদিন আগে ডাকাত দলটি পোশাক শ্রমিকদের পরিবহনে ব্যবহৃত বাস নিয়ে ডাকাতিতে নামে।
পোশাক কারখানা ছুটির পর শ্রমিকদের পৌঁছে দিয়ে মধ্য রাতে তারা এই কাজটি করে।
বাসটির চালাতেন লালন সরদার। তাকে গ্রেপ্তার করে তার কাছ থেকে মাইদুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
লালন আদালতে দোষ স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তার তথ্যের ভিত্তিতে ধামরাই থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বাস ও সহযোগী আলমগীর নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসআই ইমরান জানান, ওই বাসে ডাকাত বেশে ১১ জন যাত্রী ছিলে। লালনকে গ্রেপ্তারের পর অন্যরা আত্মগোপনে চলে যান। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার দুর্গম চর বাচা মরা এলাকা থেকে চক্রের হোতা আলমগীর সহ ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পিবিআই কর্মকর্তা জানান, মুতিহ শেখ চালকের সহযোগী হিসেবে বাসের গেইটে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতেন। পরে যাত্রী উঠলে ভেতরে লাইট বন্ধ করে দরজা বন্ধ করে দেয়া হতো।
যাত্রীদের মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা পয়সা মোবাইল হাতিয়ে নিতেন আলমগীর হোসেন।
পরে যাত্রীদের মারধর করে হাত পা চোখ বেঁধে সাভার এলাকার রাস্তার পাশে অপেক্ষাকৃত নির্জন জায়গায় ফেলে দেয়া হতো।
পিবিআই জানায়, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি তাদের আরও বেশ কয়েকজন সহযোগীর নামও জানিয়েছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ছিনতাই ও মাদক সম্পৃক্ততার মামলা রয়েছে।