স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিহারিদের সঙ্গে সংঘর্ষের পরও রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বরের ৪ নম্বর অ্যাভিনিউ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
অভিযানে উচ্ছেদ করা হয়েছে রাস্তার পাশের শতাধিক অবৈধ দোকান।বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে অভিযান শুরুর কথা থাকলেও স্থানীয় বিহারি ও ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়েন ম্যাজিস্ট্রেট ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীরা। পরবর্তী সময়ে বেলা ১১টার পর অভিযানে একটি দোকান ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন তারা।
দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন সিটি করপোরেশনের এক চালকসহ বেশ কয়েক জন।
ইটের আঘাতে ভেঙে যায় কয়েকটি বুলডোজারের গ্লাস। এর একপর্যায়ে পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ।উচ্ছেদের খবর আগে থেকে পাওয়ায় ওই এলাকার সব দোকানপাট আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়াও আশপাশের এলাকার দোকানপাটও বন্ধ রাখেন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিহারিদের সঙ্গে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলাএ সময় মেয়র আতিকুল বলেন, ‘বৃহত্তর স্বার্থে এই উচ্ছেদ অভিযান। এতে স্থানীয়দেরও সমর্থন রয়েছে। কিছু কিছু অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ বিবেচনায় এ ধরনের ইট-পাটকেল কিংবা উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্ত করছে। যত ধরনের বাধাই আসুক না কেন উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে।
‘তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে সিটি করপোরেশন থেকে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। তারা সে নোটিশ আমলে নেয়নি; বরং উচ্ছেদ অভিযান বাধাগ্রস্ত করছে। জনগণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে উচ্ছেদ পরবর্তী রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ করা হবে।’স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান ভাঙার বিষয়টি গতকাল মৌখিকভাবে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন। এই স্বল্প সময়ে দোকান থেকে মালপত্র তেমন বের করা সম্ভব হয়নি।
আবার অনেকে অভিযোগ করেন, সিটি করপোরেশন ভাঙা কিংবা উচ্ছেদের বিষয়টি তাদের অবহিত করেনি। এতে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
সিটি করপোরেশন বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় ক্ষোভ জানান ব্যবসায়ীরা।অভিযানের নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ।
তিনি বলেন, ‘রাস্তার দুই পাশে ফুটপাতের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের ধারাবাহিকতায় মিরপুর ১১ ও ৪ নম্বর অ্যাভিনিউয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়।
‘সিটি করপোরেশনের মাস্টারপ্ল্যানে ৬৮ ফুট রাস্তার কথা বলা থাকলেও অবৈধ দখলের কারণে রাস্তার পরিধি কমে যায়। রাস্তা দখলমুক্ত করতেই সিটি করপোরেশনের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে পুলিশের মিরপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার আরিফুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।’