ধর্ষণ মামলায় জেল থেকে বাঁচতে আদালতে বিয়ে করেছেন এক চিকিৎসক। বিচারকের উপস্থিতিতে হয়েছে এ বিয়ে। দেনমোহর ধরা হয় ৫০ লাখ টাকা।
বুধবার রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিয়ের পরই আসামি চিকিৎসককে জামিন দেন বিচারক মনসুর আলম।
আসামি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চাকরি করেন। তিনি বিয়ে করেছেন এক জন শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে।
আদালতে দেয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসক এবং ওই আইনজীবীর বই লেখার অভ্যাস ছিল। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজশাহীর এক ছাপাখানায় তাদের পরিচয়। সেদিনই ওই চিকিৎসক ওই নারীর ফোন নম্বর নেন। তার সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন।
ফেইসবুকেও তাদের মধ্যে কথাবার্তা হতো। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে হয় শারীরিক সম্পর্ক। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলেন না চিকিৎসক। এ কারণে ওই নারী তাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করেন।
গত ২৫ জুলাই ওই চিকিৎসক ওই নারীর ভাড়া বাসায় গিয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিওচিত্র দেখিয়ে বলেন, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে হবে। তা না হলে এ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এভাবে ভয় দেখিয়ে ওই চিকিৎসক ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।
এরপর ওই ভিডিওচিত্র নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তখন ওই নারীর বান্ধবী বাইরে থেকে ঘরের দরজা আটকে জাতীয় জারুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন করেন।
পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে ও চিকিৎসকের কাছে থাকা ভিডিওচিত্রটি জব্দ করে। এরপর ওই নারী ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে সিআইডি জানায়, ভিডিওটি এডিট করা নয়। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে অভিযোগ স্বীকার করেছেন ওই চিকিৎসক।
বুধবার দুপুরে বিয়ের পর ওই নারী বলেন, ‘ওর বাবা গত সোমবার তার ছেলেকে বিয়ে করতে আমাকে প্রস্তাব দেন। অনেক কিছু ভেবে-চিন্তে আমি রাজি হয়ে যাই।’
এরপর সেদিনই আদালতে একটি পিটিশন করা হয় যে, মামলার বাদী এবং আসামি বিয়ে করতে চান। আসামিকে যেন জামিন দেয়া হয়।
বুধবার বিচারক আসামিকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। বিচারক সিদ্ধান্ত দেন, আদালতেই তাদের বিয়ে হবে।
সে অনুযায়ী বুধবার তাকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। এরপর বিচারকের সামনেই বিয়ে হয়।
বিয়েতে ওই নারীর পক্ষে তার আইনজীবী ও চিকিৎসকের বন্ধু স্বাক্ষী হয়। আর চিকিৎসকের পক্ষে তার বাবা, ভগ্নিপতি এবং আরেকজন স্বাক্ষী হন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে আদালত ওই চিকিৎসককে জামিন দেয়।