রাজধানীর উত্তরা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায়কে দক্ষিণখানের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে মিরাজ ও বৃষ্টি নামের দুই অপহরণকারীকে। তাদের কাছ থেকে অপহরণে ব্যবহার করা একটি ছুরি, ৫৭টি ইলেক্ট্রিক্যাল ক্যাবল টাইস, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি প্লাসসহ ৪৯ হাজার টাকা জব্দ হয়েছে।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিখোঁজ হন উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের খাবার ব্যবসায়ী মিহির রায়। ১৬ জানুয়ারি মিহিরের স্ত্রী বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় অজ্ঞাতপরিচয় এক লোক দোকানে খাওয়া শেষে মালিক মিহির রায়কে বলেন, আপনাদের খাবারের মান ভালো। এক বড় ভাইয়ের প্রোগ্রামে তার ৮০ প্যাকেট খাবার লাগবে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে মিহিরকে সঙ্গে বাইরে নিয়ে যান ওই ব্যক্তি। সেই থেকে বন্ধ থাকে মিহিরের মোবাইল ফোন।
১৪ জানুয়ারি মিহিরের নম্বর থেকে ফোন পান তার স্ত্রী। কোন কথা না বলে কয়েক সেকেন্ড পর সংযোগটি কেটে দেয়া হয়। এর কিছু সময় পর অন্য একটি নম্বর থেকে ফোন আসে মিহিরের স্ত্রীর কাছে। ফোনে মিহির তার স্ত্রীকে বলেন, ‘আমার পা ও চোখ বেঁধে রেখেছে। ২০ লাখ টাকা দিলে তারা আমাকে ছেড়ে দেবে। ’
ফোনের পর মিহিরের স্ত্রী কয়েক দফায় অপহরণকারীদের দেয়া নম্বরে দুই লাখ ৯১ হাজার টাকা বিকাশ করেন। এক পর্যায়ে ১৬ জানুয়ারি বিষয়টি পুলিশকে জানান মিহিরের স্ত্রী।
জব্দ করা অপহরণে ব্যবহৃত সরঞ্জাম
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, ‘মামলার পর অপহৃত ব্যবসায়ী মিহির রায়কে উদ্ধারের জন্য রাজধানীতে অভিযান চালায় উত্তরা জোনাল টিম। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, অপহরণ চক্রটি ভিকটিমকে দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়ার হেজুর উদ্দিন রোডের একটি বাড়িতে আটকে রেখেছে। এমন সংবাদ পেয়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। বাড়িটির ৩য় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা একটি চক্র। বিভিন্ন সময় তারা অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। এ ছাড়া অপহরণের পর ভিকটিমের নগ্ন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করে থাকেন তারা।’