বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জামায়াত জঙ্গি সম্পৃক্ত’

  •    
  • ১৯ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:৩০

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎসের বিষয়ে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেখলাম ১৯৯২ সালে আফগানিস্তান থেকে এসে কিছু লোক এটি করেছে। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামী পুরোপুরি এর সুবিধাটি নিয়েছে।’

যুদ্ধপরাধের দায়ে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামীর জঙ্গি সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামী ফাউন্ডেশনে মঙ্গলবার ‘সহিংসতা ও চরমপন্থা প্রতিরোধে ইসলামিক বিজ্ঞ জনদের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উৎসের বিষয়ে মনিরুল বলেন, ‘আমরা দেখলাম ১৯৯২ সালে আফগানিস্তান থেকে এসে কিছু লোক এটি করেছে। পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামী পুরোপুরি এর সুবিধাটি নিয়েছে।

‘দেখবেন এখন যারা ধরা পড়ছে, অতীতকালে কোনো না কোনো সময়, এরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিল। ছাত্রশিবির, খেলাফত কিংবা জামায়াতে ইসলাম করত। মাওলানা সাইদুর রহমান (জেএমবি নেতা) জামায়াতের মজলিশে শুরা সদস্য ছিলেন, হবিগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির ছিলেন।’

প্রায়ই পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো বলে থাকে, বাংলাদেশেও আইএস, আল-কায়েদার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যক্রম রয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন সময় সতর্কতাও আরোপ করে তারা।

পশ্চিমা দেশগুলোকে ইঙ্গিত করে মনিরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের আল-কায়েদার অস্তিত্ব নাই। আল-কায়েদার কোনো শাখা নাই। আর যদি থাকে তাহলে তার প্রমাণ দিন। তা যাচাই-বাছাই করে আমরা ব্যবস্থা নেব।

‘শুধুমাত্র বলে আইএস আছে, আল-কায়েদা আছে, জঙ্গী আছে। বড় ধরনের হামলা হতে পারে। কিন্তু এ রকম ভয়ের কোনো কারণ নেই। বাংলাদেশ জঙ্গী কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এসবের কোনো অস্তিত্বই বাংলাদেশে নেই।’

গ্লোবাল ইন্ডেক্স রিপোর্ট তুলে ধরে মনিরুল জানান, বসবাসের দিক থেকে বাংলাদেশ ইউরোপ-আমেরিকা থেকেও আগানো। অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে ঝুঁকি অনেক কম। সাউথ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে ভুটানের পরে বাংলাদেশের অবস্থান।

‘আমি মনে করি, বাংলাদেশ ইউরোপ আমেরিকা থেকে জঙ্গিমুক্ত; অধিক নিরাপদ। বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে বিশ্বের রোল মডেল।’

পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের দাবি, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। ছবি: নিউজবাংলা

যারা জঙ্গীবাদ ও উগ্রবাদে জড়ায় তারা ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত না দাবি করে সিটিটিসি প্রধান বলেন, ‘আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা হলো ওসামা বিন লাদেন তিনি কখনও ধর্ম শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন না। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার।

‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে, ধর্মকে ব্যবহার করে কিছু সংখ্যক লোক, সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে, ধর্মের ক্ষতি হচ্ছে। সারা বিশ্বের মুসলমানদের ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে সারা বিশ্বের মুসলমানদের নামের কারণে ভিসা পেতে সমস্যা হয়।’

সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁখোর ইসলাম বিদ্বেষী মন্তব্যের জের ধরে ঢাকায় ইসলামভিত্তিক কিছু সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ফরাসি দূতাবাস ঘেরাওয়ের চেষ্টা চালায়। এ ধরনের প্রতিবাদের নিন্দা জানিয়ে মনিরুল বলেন, কিছু লোক ইসলামকে ব্যবহার করে দেশটাকে জঙ্গিবাদী দেশ হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে।

২০১৬ সালের হলি আর্টিজানের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘হামলাটা কেন হল? জঙ্গিদের সেখানে একটা উদ্দেশ্য ছিল উস্কানি দেয়া; সেটা হলো- এই হলি আর্টিজানে ঘটনা ঘটলে সরকার দিশেহারা হয়ে যাবে। যাদের দাঁড়ি আছে, টুপি আছে অর্থাৎ আলেম-ওলামা তাদের ওপরে নির্যাতন শুরু করবে সরকার। যখন আলেম-ওলামারা সরকারের বিপক্ষে চলে যাবে তখন, সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু সরকার সেই ভুলটি করেনি, বরং সরকার নির্দেশ দিয়েছে যারা প্রকৃত অপরাধী তাদের ধরতে। আমরা সেটি করার চেষ্টা করেছি।’

আলেমদের উদ্দেশ করে মনিরুল বলেন, যে লোকটির ইসলামের শিক্ষা রয়েছে। ইসলামী শিক্ষা যার ভিতরে আছে সে কখনোই জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত হতে পারে না। আমরা দেখেছি যারা জঙ্গিবাদের জড়িয়েছে তারা ইসলাম নিয়ে ভাসা ভাসা জ্ঞান রাখে। সেটাকে পুঁজি করেই, একদল লোক অন্যদের জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট করেছে।

আলেমদের উদ্দেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘যেকোনো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইসলামে না জায়েজ। এ বিষয়টা সর্বস্তরে বুঝানোর দায়িত্ব আলেম সমাজের। আপনারা প্রত্যেকটা মসজিদে একটা নির্দিষ্ট সময় এ বিষয়ে বয়ান দেবেন, আলোচনা করবেন।’

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম, ইসলামি ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ আনিস মাহমুদ অংশ নেন।

এ বিভাগের আরো খবর