বন্দর নগরীর সব জায়গায় এখন শুধুই নির্বাচনি আওয়াজ। শেষ মুহূর্তে চলছে প্রচার ও গণসংযোগ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের বাকি আর সাত দিন। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই নগরের ১৯ লাখ ভোটারের কাছে ছুটছেন প্রার্থীরা।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন। জোটের প্রার্থী হলেও শাহাদাতের পক্ষে প্রচার চালাতে এখনও মাঠে দেখা যায়নি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে।
তবে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীকে এরই মধ্যে সমর্থন জানিয়েছে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি।
জোটের প্রার্থী হওয়ার পরও শাহাদাতের জন্য কেন জামায়াত নির্বাচনি ময়দানে নামেনি, তা নিয়ে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে রোববার রাতে জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে না। তাই এই সরকারের আমলে সব ধরনের নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে বিরত রয়েছে জামায়াত। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনেও জামায়াতের কোনো প্রার্থী নেই।’
সরাসরি ভোটের রাজনীতিতে না থাকলেও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এমন দুই জন সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তারা হলেন ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউল আলম এবং ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ফারজানা পারভীন।
শফিউল আলম জামায়াতের প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব। জামায়াতের ছাত্রী সংস্থার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ফারজানা পারভীন।
নাগরিক কমিটির ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়া শফিউল আলম বলেন, ‘আমি কোনো দলের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি না। জনগণের অনুরোধে ভোটে দাঁড়িয়েছি। আশা করছি এলাকাবাসীর ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত হব।’
চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের এক নায়েবে আমির বলেন, ‘এই মুহূর্তে রাজনীতির চেয়েও সারা দেশে জামায়াত নেতাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা জরুরি। জাতীয়ভাবে সম্ভব না হলেও স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে চলার নীতি নির্ধারণ হয়েছে।’
সরাসরি সমর্থন না দিলেও আদর্শের কারণে জামায়াতের ভোটাররা বিএনপির প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে আশা করছেন নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। জামায়াত আমাদের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী। তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। পাশাপাশি বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন না দিলেও দীর্ঘ রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে জামায়াতের ভোটাররা ধানের শীষে ভোট দেবেন বলে আশা করছি।’
আগামী ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। নির্বাচনে সাত মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।