বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলের সিরিজ বোমা হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য মো. রেদওয়ানুল হকের জামিন তিন দিন পর বাতিল করেছে হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে সোমবার জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী হাসিনা জাহান হাজারী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আমিনুল ইসলাম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ রেজাউল হক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত ১৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার একজন আইনজীবী এ মামলায় তার জামিন আবেদন করেন। আবেদনের শুনানিতে তিনি বলেন, একজন গরীব মানুষ ১৫ বছর ধরে জেলে আছে। টাকার জন্য তিনি জামিন আবেদন করতে পারেননি। সব কিছু বিবেচনায় তিনি জামিন আবেদন করেন।
‘বিষয়টি শুনে আদালতও আমাদের বললেন, এত বছর হয়ে গেছে তাকে তো জামিন দেয়া যায়। সে সময় এ আসামির বিস্তারিত ফাইলও আমাদের কাছে ছিল না। তার আইনজীবীও তেমনটি বলেননি। পরে আদালত তাকে জামিন দেয়।’
তিনি বলেন, ‘কোর্ট শেষ হওয়ার পর বিষয়টি দেখে আমার খটকা লাগে। তখন ফাইল খুলে দেখি এ আসামি জেএমবি সদস্য। বিষয়টি দেখে রোববার আদালতে এসেই জামিন বাতিলের আবেদন করি। আদালত বিষয়টি দেখে আজ তার জামিন প্রত্যাহার করে তাদের আবেদনটি খারিজ করে দেন।’
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় এক যোগে বোমা হামলা চালায় জেএমবি, যা সিরিজ বোমা হামলা নামে পরিচিত।
সেদিন ফেনীর জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর ও পৌরসভা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের মামলায় রেদওয়ানুল হকের যাবজ্জীবন সাজা হয়।
তবে তার জামিন আবেদনকারীর আইনজীবী হাসিনা জাহান হাজারী তথ্য গোপনের কথা অস্বীকার করছেন।
নিউজবাংলাকে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘তথ্য গোপন করার কী আছে? বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তার যাবজ্জীবন হয়েছে। আমি কোনো তথ্য গোপন করিনি।’
তাহলে আদালত কেন জামিন আদেশ রিকল করেছে- এমন প্রশ্নে হাসিনা জাহান হাজারী বলেন, ‘আদালত কেন আদেশ রিকল করেছে, সেটা আদালতের ব্যাপার। আমি বলতে পারব না।’
ফেনীর ঘটনায় ওই দিনই বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করে পুলিশ। ২০০৫ সালের ৫ ডিসেম্বর রেদওয়ানুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়, সেই থেকে কারাগারে তিনি।
২০০৫ সালের ১০ নভেম্বর দুই মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। দুই মামলায়ই আসামি ছয় জন।
২০০৬ সালের ৩ ও ১৭ জুলাই ফেনী জেলা জজ আদালত মামলার রায় দেয়। রায়ে ছয় আসামিকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই বছরই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন রেদওয়ানুল হক, যা শুনানির অপেক্ষায় আছে।