মহেশখালীর গোরকঘাটার ঘোনা পাড়া রাস্তার পাশে ভ্যানে করে সবজি বিক্রি করছিল তিন শিশু। ভ্যানটিতে সাজানো আলু, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, পেঁয়াজ, মুলা, বেগুন, শিমসহ হরেক রকমের সবজি।
দ্বীপটিতে এমন দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। কৌতূহলবশত দাঁড় করালে ভয় পেয়ে যায় শিশুরা। পরে সাংবাদিক শুনে কিছুটা আশ্বস্ত হয়।
ভয় পাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে এক শিশু জানায়, অনেকেই ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে সবজি নিয়ে যায়।
পরে কথা হলে জানায়, তাদের মধ্যে দুই জন ভাই; অন্য জন প্রতিবেশী। বাড়ি কক্সবাজারের বড় মহেশখালী ইউনিয়নের জাগিরাঘোনা গ্রামে।
দুই ভাইয়ের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেনের বয়স ১৪ আর নিহাদ উদ্দীন সবুজের ১২। তাদের বাবা নুরুল আলম জেলে। আর তাদের প্রতিবেশী ১৪ বছরের মো. আদনানের বাবা কৃষক।
তারা আরও জানায়, করোনাভাইরাস মহামারিতে তাদের বাবারা ঠিকমতো কাজ না পাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাই তারা দিন হাজিরা হিসেবে ভ্যানে সবজি বিক্রি করছে।
ভ্যান ও সবজি কার জানতে চাইলে তিন শিশু জানায়, এগুলো বড় মহেশখালী নতুন বাজারের আবু বক্কর সওদাগরের। তার অধীনে তারা বেতনধারী হিসেবে সবজি বিক্রি করছে।
সারা দিনে তিন জন চার থেকে পাঁচ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করে। এ জন্য জনপ্রতি পায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এ টাকা দিয়েই খেয়ে না খেয়ে চলছে পরিবার।
তিন শিশুর মধ্যে সাজ্জাদ ও নিহাদ স্কুলে পড়ে। আদনান পড়ে মাদ্রাসায়। সংসারের অভাবে তাদের পড়ালেখাও হুমকির মুখে।
পড়ালেখার আগ্রহ আছে কি না জানতে চাইলে তারা জানায়, তাদের পড়তে খুব ইচ্ছা করে। সবার মতো স্কুলে যাবে, খেলাধুলা করবে, সহপাঠীদের সঙ্গে আনন্দ করবে। কিন্তু পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে এভাবে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
সুযোগ পেলে পড়াশোনা করতে চায় বলেও জানায় তারা।