আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধে ১ নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ লিবারেল ফোর্সের (বিএলএফ) মাধ্যমে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন তিনি।
ছাত্ররাজনীতি থেকে উঠে আসা এই নেতা চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সম্প্রতি নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নেন সিফায়াত উল্লাহ।আরও পড়ুন: শাহাদাত মাজারে, রেজাউল মায়ের কবরে
মেয়র পদে বিজয়ী হলে কেমন চট্টগ্রাম গড়তে চান?
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। বন্দর ঘিরে এখানে শত শত ব্যবসা চলে। দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এই বন্দর। তবে এই নগরীকে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে।
যানজট মূল সমস্যা হলেও নিরসনে তেমন উদ্যোগ নেই। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় অনুমোদনহীন স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু চট্টগ্রামকে গুরুত্ব না দিলে দেশের অগ্রগতি সম্ভব নয়।
তাই মেয়র নির্বাচিত হলে প্রথমে নগরীর ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনব। নগরীকে নতুন করে সাজাতে চাই আমি।
কোন কোন বিষয়কে চ্যালেঞ্জ মনে করছেন?
দুর্বল নগর ব্যবস্থাপনায় মূল চ্যালেঞ্জ মনে করছি। ম্যানেজমেন্ট যদি ঠিক থাকতো তাহলে চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যেতো।
এক সময় নগরীতে খেলার পর্যাপ্ত মাঠ ছিল, পরিবেশ সুরক্ষায় পাহাড় ছিল। কিন্তু এখন সেগুলোর অনেক কিছুই নেই। আমাদের সন্তানরা খেলতে মাঠ পায় না। পাহাড়গুলো বিলীন হয়ে গেছে। দূষণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বাণিজ্যের ‘লাইফলাইন’ (প্রাণকেন্দ্র) খ্যাত কর্ণফুলী দূষণের কারণে মৃতপ্রায়।আরও পড়ুন: রেজাউলকে টাকা দেবেন বউ, শাহাদাতকে বোন
জলাবদ্ধতা নিরসনে আলাদা কোনো পরিকল্পনা আছে?
জলাবদ্ধতা এই নগরকে গ্রাস করেছে। পানিবদ্ধতার কারণে বর্ষায় শত শত কোটি টাকা লোকসান গোনেন ব্যবসায়ীরা। খাল-নালা ভরাটের কারণে মূলত জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। নির্বাচিত হলে এটি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
পাশাপাশি চসিকের পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে। দখল হওয়া খাল-নালাগুলো উদ্ধার করা হবে। ভরাট হওয়া খাল-নালা খনন করা ছাড়াও পানি চলাচলের পথ তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হবে।আরও পড়ুন: রেজাউলের স্বস্তি, সংশয়ে শাহাদাত
গৃহকর নিয়ে কী করবেন?
গৃহকর সহনীয় মাত্রায় আনার জন্য আগের মেয়রের আমলে আন্দোলন করেছি। মেয়র হলে নাগরিকদের জন্য সহনীয় হারে গৃহকর নির্ধারণ করব।
নির্বাচনী প্রচারে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি: নিউজবাংলা
জয়ের ব্যাপারে আপনি আশাবাদী?
ছাত্রাবস্থায় দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিয়েছি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দলের জন্য সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছি। শেষ বয়সে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন।
মানুষকে বোঝাব, আমি তাদের জন্য কাজ করতে চাই। আশা করি ভোটাররা আমাকে নিরাশ করবে না।
স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কী করতে চান?
প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী নগরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে দাতব্য চিকিৎসালয় গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু এরপর যারা মেয়র হয়েছেন, তারা এসব চিকিৎসাকেন্দ্র ঠিকমতো পরিচালনা করেননি।
দাতব্য চিকিৎসালয়গুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে ফান্ড গঠনের পাশাপাশি নতুনভাবে প্রতিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে তুলতে কাজ করব।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হবে আগামী ২৭ জানুয়ারি। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটে এ দিন নগরীর ১৯ লাখ ভোটার সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেছে নেবেন এক জনকে।