বিদেশ থেকে আমদানি করা ফলে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য দেশের নয়টি স্থলবন্দরে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে।
ফল আমদানিতে রাসায়নিকের মাত্রা পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন বন্দরে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট বসাতে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দেয়া প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রোববার আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
নয়টি স্থলবন্দর হলো ভোমরা, বুড়িমারী, হিলি, বাংলাবান্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে কাজ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন দ্রুত কাজ চলছে।
অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে প্রতিটিতে একটি করে রাসায়নিক পরীক্ষাগার স্থাপন করতে একমত হয়েছে এনবিআর ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় ল্যাবরেটরি তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়নের কাজ করছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এডিবির টেকনিক্যাল টিমের যাতায়াত ছয়-সাত মাস বন্ধ ছিল। এতে তাদের সম্ভাব্যতা পরীক্ষার (ফিজিবিলিটি টেস্ট) কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে বর্তমানে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাসায়নিকযুক্ত ফল আমদানি রোধের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থল ও নৌবন্দরে পরীক্ষাগার স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ রিট করেন।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের সব স্থল ও নৌবন্দরে ছয় মাসের মধ্যে কেমিক্যাল টেস্ট ইউনিট স্থাপন করতে এনবিআর চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ফলে কেমিক্যাল না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশে প্রবেশের ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেয় উচ্চ আদালত।
এরপর ২০১৯ সালে আবারও নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের বিষয়ে এনবিআরের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হলে তারা প্রতিবেদন জমা দেয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এনবিআরের অধীনে দেশের ছয়টি কাস্টমস হাউজ ও ১৪টি কাস্টমস স্টেশনের মাধ্যমে ফল আমদানির সুযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও বেনাপোলের মাধ্যমে বেশির ভাগ ফল আমদানি করা হয়।
চট্টগ্রাম ও বেনাপোলে রাসায়নিক ল্যাবরেটরি রয়েছে। চট্টগ্রামে আমদানি করা ফল রাসায়নিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। সেখানে আমদানি নীতির আদেশ পালন করে চালান খালাস করা হয়।
অন্য কাস্টমস হাউজগুলোতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্ভিদ সংগনিরোধ অফিসের মাধ্যমে রাসায়নিক পরীক্ষা শেষে আমদানি করা ফল খালাস করা হয়।
১৪টি স্থল কাস্টমস স্টেশনের মধ্যে ভোমরা, বুড়িমারী, হিলি, বাংলাবন্ধা, সোনামসজিদ, শ্যাওলা, তামাবিল, বিবিরবাজার ও টেকনাফের মাধ্যমে ফল আমদানি হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফরমালিন টেস্ট করা হয়।