মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে জানিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, সীমান্ত নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। দেশটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ আছে বাংলাদেশের।
রোববার দুপুরে চাঁদপুরে একটি হাসপাতাল উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে নানা সময় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছুটে আসার পর তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে যখন চেষ্টা চলছে, তখন দেশটির এই ধরনের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বাংলাদেশে।
তবে সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, তাদেরকে জানানো হয়েছে, এগুলো মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নিয়মিত কর্মকাণ্ড।
তিনি বলেন, ‘আমি একাধিকবার মিয়ানমার ভিজিটে গিয়েছি। সে সময় মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ছাড়াও তাদের নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানরা সেই মিটিং এ ছিলেন। তখন আমাকে আশ্বাস দিয়েছে যে, তাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকায় তারা অভিযান চালাচ্ছে। যার কারণে তাদের সীমান্তে মাঝে মাঝে জনবল বৃদ্ধি করছে।
‘তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম সম্পর্ক রয়েছে। এই বিষয়টা অন্যভাবে চিন্তা না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে’- বলেন সেনাপ্রধান।
জেনারেল আজিজ বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের যোগাযোগ আছে। যখনই কোনো কিছু হয়, তা যোগাযোগের মাধ্যমে সমাধান করে থাকি। এই মুহূর্তে তেমন কিছু হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘বিষয়টি রাজনৈতিক। এ ব্যাপারে আমাদের সরকার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। আগামী দিনেও করবে।’
আজিজ আহমেদ বলেন, ‘সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। দেশের যে কোনো প্রয়োজনে সরকার প্রদত্ত যে কোনো কাজ করতে আমরা বাধ্য। এই করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
‘জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১১শ থেকে ১২শ গাড়ি নিয়ে সেনা সদস্যরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে গিয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা প্রদান ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী করোনার ন্যায় অতীতেও বিভিন্ন দুর্যোগে দায়িত্ব পালন করেছে। ভবিষ্যতেও যদি কখনও কোনো দায়িত্ব আসে, তা যথাযথভাবে পালন করবে।’
এর আগে সেনাপ্রধানের বাবার নামে নির্মিত আব্দুল ওয়াদুদ সরকার ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতাল উদ্বোধন করেন আজিজ আহমেদ। চিকিৎসালয়টি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে চার কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
অনুষ্ঠানে চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল আমিন রুহুল, জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, জেলা সিভিল সার্জন শাখাওয়াত উল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল ছাড়াও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন।