সিলেটের মুরারীচাঁদ কলেজের (এমসি) ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের মামলার অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।
সিলেট বিভাগীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রোববার সকালে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক মোহিতুল হক।
এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো এই মামলার বিচারকাজ।
আদালতের পিপি রাশিদা সাঈদা খানম জানান, এর আগে অভিযোগপত্র পর্যালোচনার জন্য বাদীপক্ষ সময় চাওয়ায় দুই বার পিছিয়ে যায় অভিযোগ গঠনের তারিখ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম জানান, অভিযোগপত্রে পুলিশ সব আসামিদের অর্ন্তভুক্ত করেছে। তাই অভিযোগপত্র নিয়ে আর আপত্তি না থাকায় আদালত তা আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠন করেছে।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আট জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
৩ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ছিল। সেদিন বাদীপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি থাকলে তা জানাতে এক সপ্তাহের সময় দেন ট্রাইব্যুনালে বিচারক মোহিতুল হক।
১০ জানুয়ারি অভিযোগ গঠনের শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারত করে আদালত। সেদিনও আদালতে বাদীপক্ষ আরও দুই দিন সময় চায়।
পিপি রাশিদা সাঈদা জানান, ১২ জানুয়ারি নির্ধারিত তারিখে বাদীপক্ষ অভিযোগপত্র নিয়ে নিজেদের সন্তুষ্টির কথা আদালতে জানায়। এরপর আদালত অভিযোগপত্র আমলে নেয়।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়।
ওই রাতেই ওই নারীর স্বামী ছয় জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনকে আসামি করে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন।
ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারভুক্ত আসামি সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম এবং সন্দেহভাজন আসামি মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর সবাইকে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে পায় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
কোনো পদে না থাকলেও গ্রেপ্তার হওয়া সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় ও কলেজ সূত্রে জানা যায়।
ওই ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। ধর্ষণের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইনও সংস্কার করে সরকার।