নীতিমালা লঙ্ঘন করে পোস্ট দেয়ায় আলোচিত ইসলামি বক্তা মিজানুর রহমান আজহারীর পেজের পোস্ট দ্বিতীয়বারের মতো ডিলিট করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তার পেজ ২৪ ঘণ্টার জন্য ব্লকও করা হয়।
এই তথ্য নিজে তার পেজে দিয়েছেন আজহারী। তিনি অভিমান করে লিখেছেন, এখন থেকে কেবল সাধারণ বিষয়ে লেখালেখি করবেন।
আলোচিত এই ধর্মীয় বক্তা কী বিষয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে ফেসবুকের নীতিমালা অনুযায়ী বেশ কিছু বিষয়ে লেখালেখি করা যায় না। এর মধ্যে আছে ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষমূলক লেখা, ভুয়া সংবাদ, মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন, কাউকে হেয় করা, বিপজ্জনক হতে পারে এমন আধেয়, সহিংসতা বা উগ্রতা উসকে দিতে পারে এমন কিছু বা অপরাধের প্রচারসহ ২৫ ধরনের পোস্ট।
ব্লক উঠিয়ে নেয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী আজহারী নিজেই আরেকটি পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পোস্টটি ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ডিলিট করার পর অনুসারীরা নানাভাবে আজহারীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আলাদাভাবে জবাব না দিয়ে পেজ ফিরে পাবার পর ফেসবুকেই এর ব্যাখ্যা দেন তিনি।
এই ধর্মীয় বক্তা লেখেন, ‘অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে, আপনার (আজহারী) সর্বশেষ পোস্টটি আপনার পেইজে এখন আর দেখা যাচ্ছে না কেন? পোস্টটি কি আপনি ডিলিট করে দিয়েছেন?
আসলে, ফেইসবুক অথরিটি নিজেই দ্বিতীয়বারের মতো, আমার গত পরশু রাতে দেয়া পোস্টটি ডিলিট করে দিয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘পোস্টটির লেখাগুলো নাকি তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের এগেইনস্টে যায়। পাশাপাশি, এবার ফেইসবুক—২৪ ঘণ্টার জন্য আমার পেইজ এক্টিভিটিও টেমপোরারিলি ব্লক করে দিয়েছিল। কিছুক্ষণ আগে সেটা এক্সপায়ার করেছে। কবে না জানি আবার পেইজটাই ডিলিট করে দেয়!’
অভিমান করে আজহারী লেখেন, ‘ভাবছি, এখন থেকে ফুল, পাখি আর লতাপাতা নিয়ে স্ট্যাটাস দিব। তাহলে তাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের এগেইনস্টে যাবে না।’
আজহারী নামে পরিচিত হয়ে উঠা এই বক্তার নাম মিজানুর রহমান। তিনি দেশে মাদ্রাসায় পড়াশোনা শেষ করে মিশরের আল আজহার ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষা নিয়েছেন। এরপর তিনি নামের সঙ্গে আজহারী যুক্ত করেন। এই নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন এখন।
ভিন্নধর্মী উপস্থাপনার কারণে দেশে ওয়াজ মাহফিলে দ্রুতই জনপ্রিয়তা পান তিনি। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে বক্তব্য দিয়ে তিনি সমালোচিত হয়েছেন।
গত মার্চে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর একে আল্লাহর সৈনিক আখ্যা দিয়েছিলেন। বলেন, ইসলামী অনুশাসন মানলে এই ভাইরাস কিছু করতে পারবে না। যদিও মালয়েশিয়ায় নিজে কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।
বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় বিষয়ে বেশ কিছু আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে একাংশের রোষেও পড়েছেন তিনি। আর এ জন্য পরে ফেসবুকে এসে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
২০২০ সালের শুরুতে তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে মালয়েশিয়ায় চলে যান। সেখান থেকে মূলত সামাজিক মাধ্যমে তার বক্তব্য প্রচার করছেন।